ইয়েমেনে সরকারি বাহিনী-হুথি সংঘর্ষ, নিহত ১৪০

ইয়েমেনের মারিব প্রদেশে সরকারি সৈন্যদের সঙ্গে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত ১৪০ জন হুথি বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করছে সরকারি বাহিনী। সামরিক কর্মকর্তাদের সূত্রে গতকাল বৃহস্পতিবার এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।

ইয়েমেনের মারিব শহরে প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়েছে

আরব নিউজ আরো জানিয়েছে, সেখানে গত পাঁচদিন ধরে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। সরকারি প্রতিরোধ ভেঙে মারিব দখলের চেষ্টায় হুথি বিদ্রোহীরা সরকারি অবস্থানে হামলা জোরদার করে। কিন্তু আরব জোটের যুদ্ধবিমানের সহায়তায় ইয়েমেনের সরকারি বাহিনী হুথিদের এই হামলা সফলভাবে প্রতিরোধ করেছে বলে দাবি করা হয়। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদে রাব্বি মনসুর হাদি ইরানের বিপ্লবী বিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়া এবং ইয়েমেনের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করার ইরানের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

জানা গেছে, গত শনিবার থেকে হুথিরা মারিব দখলের লক্ষ্যে হামলা চালাতে শুরু করে। লাগাতার লড়াইয়ের এক পর্যায়ে আরব জোটের যুদ্ধবিমানগুলো হুথিদের জনবল ও অস্ত্রশস্ত্র লক্ষ্য করে ৪০টির বেশি হামলা চালায়। এতে হুথি পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

লড়াইয়ে আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসা চলছে

ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর সামরিক গণমাধ্যমের পরিচালক ইয়াহিয়া আল-হাতেমি বলেন, গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী আক্রমণ। কিন্তু ইয়েমেনের সেনাবাহিনী সমস্ত আক্রমণ ঠেকিয়ে দিয়েছে। জোটের বিমান হামলায় হুথি সদস্যবহনকারী ছয়টি গাড়ি ধ্বংস হয়। এতে নিহত হুথির সংখ্যা ১৪০-এর বেশি হবে।

টুইটারে সরকারপন্থী অ্যাকাউন্টগুলাতে মারিব প্রদেশের হেলান, আল-মাশজাহ, রাহাবা ও আল-কাসারা এলাকায় পাহাড়ি যুদ্ধক্ষেত্রে পড়ে থাকা কয়েক ডজন মৃত হুথিদের গ্রাফিক ছবি পোস্ট করা হয়েছে। এসব স্থানে আরো অনেকে আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হওয়া সত্ত্বেও, হুথিরা গত ফেব্রুয়ারি থেকে তেলসমৃদ্ধ মারিব শহরের নিয়ন্ত্রণ পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শহরটি সরকারের শেষ প্রধান ঘাঁটি। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করে বলছে, মারিবকে কেন্দ্র করে এমন লড়াই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলবে এবং আরো অনেক লোকের বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

ইয়েমেনে যুদ্ধের শুরু থেকে মারিব শহরটি শান্তি ও স্থিতিশীলতার শহর হিসেবেই ছিল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাস্তুচ্যুত ১০ লাখের বেশি মানুষ নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে এখানে এসে থাকতে শুরু করেছিল। কিন্তু মারিবকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক এই লড়াইয়ের কারণে এ অঞ্চলের অনেক পরিবার আবার গ্রাম ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে।

২০১২ সালের প্রথম দিকে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে হাদি সরকার হুথিদের উন্নত অস্ত্র, সামরিক জ্ঞান এবং তহবিল সরবরাহ করে ইয়েমেনের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য তেহরানের সমালোচনা করে আসছে।