কাশ্মিরসহ বিশ্ব মুসলিমের পাশে থাকবে তালেবান

মুসলিম হিসেবে কাশ্মির-ভারতসহ পৃথিবীর সকল প্রান্তের মুসলিমদের হয়ে কথা বলার অধিকার রয়েছে তালেবানের। এমন মন্তব্য করে সংগঠনটির মুখপাত্র ড. সুহাইল শাহিন বলেছেন, মুসলিম হিসেবে আমরা অবশ্যই কথা বলবো। আজ শুক্রবার এমন খবর দিয়েছে ভারতের এনডিটিভি।

কাবুলে তালেবান যোদ্ধা ও কাশ্মিরের মানচিত্র, ফাইল ছবি

ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে তালেবান মুখপাত্র আরো বলেন, মুসলিমরাও আপনাদের দেশের মানুষ, আপনাদেরই নাগরিক। তাদের সমান অধিকারের কথা আপনাদের আইনেই বলা আছে। সেটিও আমরা আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।

এর আগে গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার কয়কদিন পর কাশ্মির ইস্যুতে তালেবান বলেছিল, এটি দ্বিপক্ষীয় ও দু’দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের একসঙ্গে বসে এই সমস্যার সমাধান করা উচিত। তবে এই প্রথম সংগঠনটির একজন মুখপাত্র সরাসরি কাশ্মিরিদের অধিকার নিয়ে কথা বললেন, এটি নতুন বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তালেবান মুখপাত্র ড. সুহাইল শাহিন, ফাইল ছবি

এমন সময় এই বক্তব্য সামনে এলো যখন একদিকে তালেবান সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গেও তালেবানের প্রথম বৈঠক হওয়ার দু’দিন পরে কাশ্মির ইস্যুতে নতুন অবস্থান প্রকাশ করা হলো। তালেবান নেতা শের মোহাম্মদ আব্বাসের কাছে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কাতারে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তাল।

তার আগে পাকিস্তানের সরকারি দল তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা নিলাম ইরশাদ বলেছিলেন, ভারতের কবল থেকে কাশ্মিরের স্বাধীনতার জন্য ইসলামাবাদকে সাহায্য করবে তালেবান। এক টকশোতে তিনি আরো বলেন, কাশ্মিরের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে তালেবান।

ডয়চে ভেলে জানায়, আফগানিস্তানে ক্ষমতার পালাবদলের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের ওপর। বিশেষ করে, দিল্লি নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মির সমস্যায় তালেবানের উত্থানে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। অবশ্য ভারতীয় ও কাশ্মিরি নেতাদের বক্তব্যেও বিষয়টি ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

কাশ্মিরের ভৌগোলিক অবস্থান, ফাইল ছবি

গণমাধ্যমটির সাংবাদিক ও কাশ্মির বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন জেন বলছেন, তালেবানের আগের শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) তাদের বহু যোদ্ধা কাশ্মিরের এসেছেন। তারা সেখানকার স্বাধীনতাকামীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। কাশ্মির সীমান্তে মিছিল করেছেন তালেবান যোদ্ধারা।

গত ২০ বছর আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পরিস্থিতি পাল্টে যায়, তালেবানের পক্ষে আফগান যুদ্ধে যোগ দেয় বহু কাশ্মিরি যোদ্ধা। এখন কাবুলে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ ফের প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এবার তারা কাশ্মিরে ফিরবে। তালেবানের একটি অংশও কাশ্মিরের দিকে ফের নজর দিতে পারে। অতীতের ঘটনাপ্রবাহ সেই কথাই বলছে, সে কারণে ভারতীয় সেনা অফিসার কাশ্মিরি যুবকদের খেলাধুলায় মন দিতে বলছেন বলে জানান সালাউদ্দিন জেন।