যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছে তালেবান!

কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে গত ১৫ আগস্ট। এরপর সরকার গঠন প্রশ্নে জানায়, বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের আগে সরকার গঠনের কোনো সিদ্ধান্ত তারা নেবে না। ৩১ আগস্টের সেই সময়সীমা পার হওয়ার পর বলা হয়, শুক্রবার জুমার পরে সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়া হবে। কিন্তু পরে জানানো হয়, শনিবার সরকার ঘোষণা হতে পারে। শনিবারে এসে সেই সরকার গঠনের ঘোষণা আরো এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘোষণার সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্যের পরীক্ষার পরিধি আরেকটু বেড়েছে।

তালেবানের সরকার ঘোষণা আবারো পিছিয়েছে, ফাইল ছবি

গতকাল শনিবার তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, সরকার গঠনের জন্য আরো সময় দরকার। তাই সময় পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভার সদস্য ও নতুন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম জানিয়ে দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে যুক্তি দেখিয়ে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খলিল হাক্কানি বলেন, তালেবান চাইলে একাই এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে সরকার গঠন করতে পারত। সবপক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই খানিকটা বিলম্ব হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

এদিকে সরকার বিষয়ে তালেবানের এই বিলম্বিত ঘোষণায় সমস্যায় পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ চীন রাশিয়ার মতো বেশ কিছু দেশ তেমন কোনো শর্ত ছাড়াই তালেবানের সাথে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত বলেই মনে হচ্ছে। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র তালেবান বিষয়ক অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে নতুন আফগান সরকারের চেহারা দেখতে চাইছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, তালেবান নতুন সরকার কীভাবে গঠন করে এবং কী নীতি অনুসরণ করে স্বীকৃতি দেয়ার আগে তা দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও গণমাধ্যমে তালেবান নতুন সরকারের ব্যাপারে কিছু ধারণা দিয়েছে। এ বিষয়ে ব্লিংকেন বলেন, এসব প্রতিবেদনে পরিষ্কার কিছুই বলা হচ্ছে না। আমরাও এ স্পষ্ট কোনো ধারণা পাচ্ছি না। তাই আফগানিস্তানের নতুন সরকার আসার আগ পর্যন্ত আমরাও কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

তবে আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের কাছ থেকে বাইডেন প্রশাসন কেমনটি প্রত্যাশা করে সে ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাধারণভাবে বলা যায়, নতুন সরকারে বিভিন্ন দলের বা গোত্রের অন্তর্ভুক্তি দেখতে চায়। পাশাপাশি আফগান জনগণের চলার স্বাধীনতা, কোনো নাশকতায় আফগান ভূমি ব্যবহার করা যাবে না। নারী ও সংখ্যালঘুদের সাথে সহনশীল আচরণ করতে হবে।

সূত্র: দ্য ডন ও ট্রিবি্উন এক্সপ্রেস