সৌদির লক্ষ্যে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

হুথিদের ছোড়া তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার দাবি করেছে সৌদি আরব। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দেশটির তেল সমৃদ্ধ অঞ্চল পূর্ব সৌদির নাজরান ও জাহান শহর লক্ষ্য করে গতকাল শনিবার (৪ আগস্ট) ছোড়া হয়েছিল। এখন পর্যন্ত হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।

সৌদি আরবে হুথিদের আক্রমণ

কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, এই হামলা হুথিদের কাজ, যারা ইয়েমেনে ইরানের পক্ষে বিদ্রোহ করেছে। আল জাজিরা।

রয়টার্সের বরাত দিয়ে সৌদি প্রেস এজেন্সি জানাচ্ছে, সৌদির দাম্মাম শহরের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ দাম্মামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দুই শিশু আহত হয়েছে এবং ১৪টি আবাসিক ভবনের আলো নিভে যায়। এ ব্যাপারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিও দিয়েছে।

তেলক্ষেত্রগুলো লক্ষ্য করে হুথিদের হামলা চলছেই

সৌদি নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকেও মিসাইলবাহী তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করার তথ্য দেওয়া হয়েছে। হামলাগুলো সৌদি আরবের শহর লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে বলেও জানায় যৌথবাহিনী। সৌদির দক্ষিণের আভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলার চার দিনের মাথায় এই হামলা চালানো হল। বিমানবন্দরের ওই হামলায় ৮ জন আহত এবং বেসামরিক বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সৌদির তেলক্ষেত্রগুলো লক্ষ্য করে হুথিদের বিমান ও ড্রোন হামলা চলছেই। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে দুটি আরামকো প্ল্যান্টে হুথিরা হামলা করলে সৌদি আরবের অর্ধেক তেল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

খবরে বলা হচ্ছে, শনিবারের হামলায় আরামকোর কোনো তেল প্ল্যান্টের ক্ষতি হয়নি। হামলাগুলো আরামকো এরিয়ার বাইরের লক্ষ্যের দিকে যাচ্ছিল। সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সৌদি আরব দেশটির ভূমি রক্ষায় সর্বদা সতর্ক পাহারায় রয়েছে। হামলা ঠেকাতে এবং জনগণকে রক্ষা করতে সৌদি সরকার সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ধরনের হামলা আন্তর্জতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।

সৌদি নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের দমনে যুদ্ধ করছে। মূলত মনসুর হাদি সরকারকে টিকিয়ে রাখতেই সৌদির এই তোড়জোড়। হুথিরা ইরানের পক্ষে এবং সৌদি সরকার মনসুর হাদির পক্ষে প্রতিদিন যুদ্ধে লিপ্ত। এ পর্যন্ত এ যুদ্ধ ১০ হাজার প্রাণ ঝরেছে। বাড়িঘর হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই যুদ্ধে মানবাধিকারের ব্যাপক লঙ্ঘন হচ্ছে।

জাতিসংঘ যখন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করছে, তখনই হুথিরা সানা বিমানবন্দর পুনরায় চালু করার দাবি করেছে। ২০১৬ সাল থেকে সৌদির বাধায় বিমানবন্দরটি বন্ধ হয়ে আছে। এতে যুদ্ধবিরতি কিংবা সমঝোতার পথ আরও কঠিন হয়ে গেছে।