মিয়ানমারে যুদ্ধের ডাক

মিয়ানমারে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ‘গণপ্রতিরক্ষা যুদ্ধের’ ডাক দেয়া হয়েছে। দেশের সব পর্যায়ের জনগণকে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধকে গণবিপ্লব আখ্যা দিয়ে সব নাগরিককেই চলমান সন্ত্রাসী শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

এনইউজির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দুওয়া লাশি

মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পার্লামেন্ট সদস্যদের নিয়ে গঠিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দুওয়া লাশি এই আহ্বান জানান। গতকাল মঙ্গলবার ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় এই আহ্বান জানানো হয়।

২০২০ সালের শেষদিকে জাতীয় নির্বাচনে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বড় ব্যবধানে জয়লাভ করে। কিন্তু এর পরপরই পার্লামেন্টে আসন বিন্যাস সংক্রান্ত সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয়। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে ২৫ শতাংশ কোটা থাকা সশস্ত্র বাহিনী।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের সমর্থনে রাজপথে বিক্ষোভ, ফাইল ছবি

কিন্তু দেশটির নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেয়। এরপর চলতি বছরের ১ ফেব্রয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সন সুচিকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং।

পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে গত সাত মাসেরও বেশি সময়ে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন এবং কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে আটক রাখা হয়েছে। অং সান সুচি ও তার দল এনএলডির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বর্তমানে গৃহবন্দি বা কারাবন্দি অবস্থায় আছেন।

সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ৪৫ জন নিহত এবং ৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে ঘুরছেন আরো এক হাজার ৯৮৪ জন।

সূত্র : আলজাজিরা ও রয়টার্স