ব্রিকস সম্মেলনে আফগানিস্তান, যে যা বললেন

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত একটি মঞ্চ হলো ব্রিকস। সংস্থাটির শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। এতে সভাপতিত্ব করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অনলাইন এই বৈঠকে সংযুক্ত ছিলেন রাশিয়া, ব্রাজিল, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট।

ব্রিকস সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা

এদিন ব্রিকসের ১৩তম শীর্ষ সম্মেলনে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আফগান ইস্যুতে নিজ নিজ দেশের অবস্থান নিয়ে কথা বলেছেন দেশগুলোর নেতারা। তবে আলোচনায় তালেবানের নাম নেওয়া হয়নি। আবার তাদের ওপর কোনো দোষারোপও করা হয়নি। তবে আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতি, সন্ত্রাসবাদ ও মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্রিকস।

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে গৃহীত ভারতের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে মানবাধিকার, বিশেষ করে নারী, শিশু এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণ করতে হবে। মোকাবেলা করতে হবে মানবিক সংকটের। একই সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চলমান সমস্যা সমাধানের কথা বলা হয়েছে।

ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের মাটি থেকে যেন কোনো সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড পরিচালিত না হয়। অর্থাৎ দেশটি যেন সন্ত্রাসবাদের নিরাপদ অভয়ারণ্য না হয়ে ওঠে। সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সম্মেলনে আফগান ইস্যুতে সবচেয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে যদি অস্থিরতা থাকে তাহলে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও তার প্রভাব পড়বে। আফগানিস্তান যেন মাদকপাচার ও সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্র না হয়। দেশটির নাগরিকদের অধিকার দিতে হবে, তাদের দেশ কী রকম হবে সেটা তারাই ঠিক করবেন।

রুশ প্রেসিডেন্টের অভিযোগ হলো— যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দেশটিতে নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। এর ফলে গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। কৌশলগতভাবে স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়েছে। মেটেনি আঞ্চলিক বিরোধও। দেশটিতে একটা গোলমেলে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে, সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, যেকোনো পরিবর্তনকে স্বাগত জানাতে হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। নিজেদের অগ্রাধিকার ঠিক করে সহযোগিতার ভিত্তিতে চলতে হবে। আর সেই সহযোগিতা যেন ফলপ্রসূ হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বাস্তব চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রয়োজন হলে সহযোগিতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে।

সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ব্রিকসের সভাপতিত্ব করতে পেরে খুবই খুশি তিনি। ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো করোনা সংকটের সময় নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করেছে। আগামী ১৫ বছরে সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিজেদের মধ্যে যেন সহযোগিতা অনেকটাই বাড়াতে পারে সেটাই চায় ভারত।