‘মিত্রদের চাপে’ আফগান সরকারের শপথ বাতিল

নাইন-ইলেভেন বা ২০০১ সালের এই ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনার ২০ বছর পূর্তির দিন আজ শনিবার শপথ নেয়ার কথা ছিল তালেবানের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের। তবে ‘মিত্র দেশগুলোর চাপে’ সেটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

তালেবান সরকারের মন্ত্রীরা, ফাইল ছবি

ওই হামলার জন্য আল কায়েদাকে সরাসরি দায়ী এবং সহযোগিতার জন্য তালেবানকে অভিযোগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। অভিযোগ অস্বীকার করলেও তাদের উৎখাতে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। দুই দশক ধরে সেই যুদ্ধ চলে এবং গত ১৫ আগস্ট তালেবানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার মাধ্যমে তার অবসান ঘটে। 

আফগান যুদ্ধে কার্যত ‘পরাজয়’ মেনে নিয়ে দেশটি থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হয় ৩১ আগস্টের ডেডলাইনের মধ্যেই। এরপরই বিজয় উদযাপনের মধ্য মিয়ে অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে তালেবান। সংগঠনটি বলছে, নাইন-ইলেভেনে হামলার জন্য ওসামা বিন লাদেন দায়ী, সেটি কেউ প্রমাণ করতে পারেনি এত বছরেও।

ভ্লাদিমির পুতিন, ফাইল ছবি

গণমাধ্যমগুলো বলছে, তালেবান সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় রাশিয়া, ইরান, চীন, কাতার, পাকিস্তান ও তুরস্ককে। শপথ অনুষ্ঠানের আগের দিন গতকাল শুক্রবার রাশিয়া জানায়, ‘কোনো উপায়েই’ তালেবান সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে না মস্কো। নতুন এই শাসকদের অধীনে দেশটি কোন দিকে অগ্রসর হবে, সেটি আমরা এখনো নিশ্চিত নই।

এর আগে রাশিয়া জানিয়েছিল, তালেবানের অন্তবর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা পাঠাবে মস্কো। এই দিনের শপথ অনুষ্ঠানকে ‘অমানবিক’ আখ্যায়িত করে তা বাতিল করতে তালেবানকে পরামর্শ দেয় কাতারও। এমন তথ্য দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা তাস গতকাল জানায়, মিত্র দেশগুলোর চাপের কারণে শেষ পর্যন্ত শনিবারের শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করে তালেবান।

তবে কয়েকদিন আগেই শপথ অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তালেবান সরকারের সাংস্কৃতিক কমিশন। সংস্থাটির সদস্য ইনামুল্লাহ সামানগানি টুইটে জানান, ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানের নতুন মন্ত্রিসভা এরইমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমরা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাই না।

পশ্চিমা হামলার মুখে ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া তালেবান ফের ক্ষমতায় ফিরে সব দেশের কাছে স্বীকৃতি চাইছে। এতে বেশিরভাগ দেশ এখনই সাড়া না দিলেও তালেবান সরকারের সাথে কাজ করার কথা জানিয়েছে চীন, তুরস্ক, ইরান, রাশিয়া, পাকিস্তান ও কাতার। এসব দেশ ছাড়াও তালেকান সরকারকে স্বীকৃতির প্রশ্নে আরো সময় নেয়ার পথে হাঁটছে অন্যান্য দেশ।