বার্সার দুর্দশা বাড়াল অ্যাটলেটিকো

মৌসুমের শুরু থেকেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে বার্সেলোনা। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শুরুর দুই ম্যাচে হার। গোল হজম ছয়টি। স্প্যানিশ লা লিগায় অপরাজিত থাকলেও কাতালানরা পয়েন্ট খুইয়েছে তিন ম্যাচে। অবশেষে লিগে বার্সার অজেয় থাকার তকমাটাও তুলে ফেলল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।

চ্যাম্পিয়নস লিগের পর ঘরোয়া লিগেও পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল বার্সা। শনিবার রাতে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠে গিয়ে ২-০ গোলে হেরেছে কাতালানরা। সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এনিয়ে টানা তিন ম্যাচে হারল রোনাল্ড কোম্যানের দল। এই হারে লিগ টেবিলের নয় নম্বরে নেমে গেলেন পিকে-ডিপেইরা।

ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথম ভাগেই দুই গোল করে ফেলে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। মহারণ কার্যত শেষ হয়ে গেছে ওখানেই। পয়েন্ট পেতে হলে দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ কিছু করতে হতো বার্সেলোনাকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই শক্তিশালী অ্যাটলেটিকোর বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কোম্যানের দল।

যদিও বরাবরের মতো বলের দখলে একক আধিপত্য ছিল বার্সার। এমনকি আক্রমণেও। ৭০ শতাংশ বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে নয়টি শট করেছে বার্সা। আর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ নিয়েছে ছয় শট। কিন্তু ফিনিশিং দুর্বলতায় গোল পায়নি কাতালানরা। বরং রক্ষণের ভুলে ম্যাচের ২৩ মিনিটে গোল হজম করে বসে অতিথিরা।

ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা টমাস লেমার কোনাকুনি শটে বার্সার জালে বল জড়ান। গোলের জোগানদাতা বার্সারই সাবেক স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। গোল হজমের পর জেরার্ড পিকে ও সার্জিও বুসকটেস জড়ান তর্কে। মধ্যমাঠের প্রাণ মেম্ফিস ডিপেইকেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। লেমারের গোলটা যেন বার্সার গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে দেয়!

সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ফের কেঁপে ওঠে বার্সার জাল। আগের গোলে অ্যাসিস্ট করা সুয়ারেজ এবার নিজেই গোল করলেন। বিরতির মিনিট খানেক আগে হোয়াও ফেলিক্সের কাছ থেকে বল পেয়ে বার্সার জালে বল পাঠান উরুগুয়েন স্ট্রাইকার। কিন্তু গোল উদযাপন করেননি পুরনো ক্লাবকে সম্মান জানিয়ে। গোলের পর বার্সা ও তাদের ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সুয়ারেজ।

সুয়ারেজ গোল করার পর উদযাপন না করে অঙ্গীকার রেখেছেন। কিন্তু ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রাখতে পারেনি বার্সা। ম্যাচে অন্তত একটা গোল না করাটা তাদের জন্য অন্যায় ছিল। কিন্তু কুতিনহো, ডিপেইরা ভক্তদের হতাশা বাড়াতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত যা রূপ নেয় হারের বিষাদে।

এমনিতেই সময়টা কঠিন যাচ্ছে বার্সার। তারওপর সাম্প্রতিক লড়াইগুলোতে এই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ভালোই ভোগাচ্ছে কাতালানদের। তবে এবারের লড়াইয়ে নড়বড়ে বার্সার বিরুদ্ধে ফেভারিট ছিল ডিয়েগো সিমনের দল। কেন ফেভারিট ছিল মাদ্রিদ জায়ান্টরা সেটার ছাপ মাঠের পারফরম্যান্সে দেখা গেছে।

সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সার বিরুদ্ধে এনিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ অপরাজিত থাকল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তন্মধ্যে জয় তিনটিতে। যার দুটিই লা লিগায়। এবারের ড্রয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদকে ছুঁয়ে ফেলল অ্যাটলেটিকো। আট ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে তারা।

সাত ম্যাচে একই পয়েন্ট শীর্ষে থাকা রিয়ালের। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের নয় নম্বরে নেমেছে বার্সা। তিনে থাকা রিয়াল সোসিয়োদের পয়েন্ট ১৬। ছয় ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে সেভিয়া। আট ম্যাচে তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ-এ উঠে এসেছে ওসাসুনা।