তাইওয়ান সীমান্তে ১৫০ যুদ্ধবিমান!

তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা এলাকায় গত কয়েকদিনে অন্তত ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। স্বায়ত্তশাসিত ওই অঞ্চলটিকে নিজেদের এলাকা দাবি করে আসছে বেইজিং। দফায় দফায় এসব বিমান পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে অঞ্চলটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সবশেষ ৪টি যুদ্ধবিমান বিতর্কিত প্রাতাস দ্বীপের পাশ দিয়ে উড়ানো হয় গতকাল সোমবার।

তাইওয়ানের আকাশসীমায় চীনা যুদ্ধবিমান, ফাইল ছবি

বিবিসি জানায়, গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত তাইওয়ানের সীমানায় প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। যুদ্ধবিমানের এই বহরে ৩৪টি জে-১৬ এবং পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ১২টি এইচ-৬ বোমারু বিমানও ছিল। গতকালের যুদ্ধবিমান ৪টি প্রাতাস দ্বীপের যে এলাকায় উড়ানো হয়, সেই এলাকা নিজের বলে দাবি করে আসছে তাইওয়ান।

এর আগে কখনোই তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানায় এত বিপুল সংখ্যক চীনা যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়নি। এটিকে স্মরণকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘটনা বলে জানানো হয় খবরে। এ ঘটনাকে ‘উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড’ আখ্যায়িত করে তা অনতিবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে তাইওয়ান সরকার।

তাইওয়ানের আকাশসীমায় চীনা যুদ্ধবিমান, ফাইল ছবি

সেখানকার শীর্ষ নীতিনির্ধারণী সংস্থা মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল (এমএসি) জানিয়েছে, তাইওয়ানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবশেষ এসব কর্মকাণ্ডে। হুমকির কাছে কখনো আপস করা হবে না উল্লেখ করে সংস্থাটির মুখপাত্র চিউই চুই চেং বলেন, এতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা আরো হুমকির মুখে পড়বে।

গত ১ অক্টোবর নিজেদের আকাশ সীমানায় ৩৮টি চীনা যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের অভিযোগ করেছিল তাইওয়ান। এর আগেও অসংখ্যবার যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে বেইজিং, যা সাম্প্রতিক সময়ে চরম উত্তেজনা তৈরি করেছে। এ জন্য চীনের ষড়যন্ত্র থাকার দাবি করে প্রয়োজনে যুদ্ধে নামারও হুমকি দিয়ে রেখেছে তাইওয়ান সরকার।

অন্যদিকে, তাইওয়ান কেন্দ্রিক উত্তেজনা বাড়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অঞ্চলটিতে যেকোনো চক্রান্ত নস্যাৎ করতে সব পদক্ষেপ নেয়া হবে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় দৃঢ় সংকল্প রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর চীনের ওপর চাপ বাড়াতে তাইওয়ানকে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ১০০টি হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র বা কোস্টাল ডিফেন্স সিস্টেম বিক্রির বিষয়টি অনুমোদন করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তাইওয়ান উপকূলে বিপুল সংখ্যক সেনা ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র মোতায়েন করে বেইজিং। পুরনো ডিএফ-১১এস ও ডিএফ-১৫এস মিসাইল সরিয়ে অত্যাধুনিক ডিএফ-১৭ হাইপারসনিক মিসাইল বসানো হয়।