তাইওয়ান: চীনের হাতে পতন হলে বিপর্যয় সৃষ্টি হবে

স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানে স্মরণকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে সামরিক চাপ বাড়িয়েছে চীন। গত ৪ দিনে নিজেদের আকাশসীমায় অন্তত ১৫০টি চীনা বিমান শনাক্তের দাবি করেছে অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ। এমন প্রেক্ষাপটে ‘কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তাইওয়ানি প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন।

চীন ও তাইওয়ানের পতাকা

ফরেন অ্যাফেয়ার্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধে সতর্ক করে তিনি বলেন, চীনের হাতে তাইওয়ানের পতন ঘটলে তা আঞ্চলিক শান্তি ও গণতন্ত্রের ওপর বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। আমরা সামরিক সংঘাত চাই না। তবে আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষার্থে যেকোনো ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছি।

বিবিসি জানায়, শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত তাইওয়ানের সীমানায় প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। যুদ্ধবিমানের এই বহরে ৩৪টি জে-১৬ এবং পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ১২টি এইচ-৬ বোমারু বিমানও ছিল। গতকাল ৪টি যুদ্ধবিমান প্রাতাস দ্বীপের যে এলাকায় উড়ানো হয়, সেই এলাকা নিজের বলে দাবি করে আসছে তাইওয়ান।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন, ফাইল ছবি

গত এক বছরে প্রায়ই অভিযোগ করা হয়েছে, দ্বীপটির আকাশসীমায় দফায় দফায় যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। চলতি মাসে গত ১ অক্টোবর নিজেদের আকাশ সীমানায় ৩৮টি চীনা যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের অভিযোগ করেছিল তাইওয়ান। এর আগেও বহুবার যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে বেইজিং, কিন্তু এত সংখ্যক চীনা যুদ্ধবিমান কখনোই পাঠানো হয়নি। এ ঘটনাকে ‘উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড’ আখ্যায়িত করে তা অনতিবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে তাইওয়ান সরকার।

সেখানকার শীর্ষ নীতিনির্ধারণী সংস্থা মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল (এমএসি) জানিয়েছে, তাইওয়ানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবশেষ এসব কর্মকাণ্ডে। হুমকির কাছে কখনো আপস করা হবে না উল্লেখ করে সংস্থাটির মুখপাত্র চিউই চুই চেং বলেন, এতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা আরো হুমকির মুখে পড়বে।

অন্যদিকে, তাইওয়ান কেন্দ্রিক উত্তেজনা বাড়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অঞ্চলটিতে যেকোনো চক্রান্ত নস্যাৎ করতে সব পদক্ষেপ নেয়া হবে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় দৃঢ় সংকল্প রয়েছে।

পার্সটুডে জানায়, তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে চীন। অঞ্চলটির পুর্নস্বাধীনতা নিয়ে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে দেশটি। ফলে বেইজিংয়ের মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ সামরিক সহযোগিতা নিচ্ছে তাইওয়ান।