সৌদি শিক্ষাব্যবস্থায় চীনা ভাষা

বর্তমান বিশ্বে চীনা ভাষায় কথা বলে থাকেন এমন লোকবলের সংখ্যা হবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ। এ অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে নিজেদের শিক্ষাব্যবস্থায় চীনা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে সৌদি আরব। দেশটির বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা লক্ষ্য করে কারিকুলামে চীনা ভাষাকে বাধ্যতামূলক বিদেশি ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

সৌদি আরবের একটি বিশ্ববিদ্যালয়, ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে এমনকি সৌদি আরবেও আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো এমন লোকদের নিয়োগ দিতে চায়, যারা একাধিক ভাষায় কথা বলে। সেক্ষেত্রে জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয় পাইলট প্রকল্প হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য চীনা ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক করেছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এর দ্বারা শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি উপকৃত হবে। কারণ জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষার মধ্যে চীনা ভাষা শেখার চাহিদা বেশি।

তবে শুধু জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য চীনা ভাষায় প্রোগ্রাম চালু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে বিষয়টি সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের উচ্চাভিলাষী সৌদি ভিশন ২০৩০-এর শিক্ষা খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অবদান রাখবে।

জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শেখার ইনস্টিটিউট চালুর চুক্তি

এক সাক্ষাৎকারে জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ইনস্টিটিউটের ডিন ইব্রাহিম সাদি বলেন, ক্রাউন প্রিন্স শিক্ষাগত কর্মসূচিতে ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ জারি করার পর তার প্রতিষ্ঠান চীনা ভাষা শেখানো শুরু করে। জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয় এখন ইংরেজির সাথে চীনা ভাষাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে চালু করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল চীনা ভাষাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যম হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।

আরেক সাক্ষাৎকারে সাদি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে ইচ্ছুক সকল শিক্ষার্থীকে অবশ্যই চীনা ভাষা দক্ষতার নীতির উপর একটি কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। কারণ এটি প্রস্তুতিমূলক বছরের প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয় জিনানভিত্তিক শানডং নরমাল ইউনিভার্সিটির সাথে এ বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে। এর আওতায় এটি জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভিডিও-রেকর্ডকৃত পাঠ প্রদান করবে।

সৌদি আরব ও চীনের মধ্যে ১৯৯০ সাল থেকে স্থিতিশীল সম্পর্ক বিরাজমান। ২০১৯ সালে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান চীন সফরে গেলে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন। এরপরেই সৌদি যুবরাজ চীনা ভাষায় দক্ষতা অর্জন করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দেন।