আপনি পড়ছেন

ফারাক্কার পানিতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ৩০টি গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ার ধারাবাহিকতা অব্যহত থাকায় শনিবারের মধ্যে আরও অনেক গ্রাম বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

kushtia doulatpur

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফারাক্কা বাঁধের প্রায় সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় চিলমারী ও রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় দিনযাপন করছেন। ইতোমধ্যেই বন্যার পানি ঘরে ঢুকে মজুদকৃত ধান, চালসহ অন্যান্য খাবার জিনিস নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি তীব্র খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ বলেন, ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার পর থেকে অব্যাহতভাবে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। চিলমারী ইউনিয়নের ১৮ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের অন্য বন্যাগুলোতে এতো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এদিকে এই দুই ইউনিয়নের ৬০ হাজার বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে অভিযোগ করছেন চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের জনগণ।

চর বাহিরমাদি গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান অভিযোগ করেন, ঘর-বাড়ি সব পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান-পাট সব নষ্ট, কিছুই বাকি নাই। আমাদের খবরও কেউ নেয় না।

উল্লেখ্য, ফারাক্কা বাঁধের প্রায় সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে পানিপ্রবাহ দ্রুত বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পদ্মা নদীতে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সেখানে আজ শুক্রবার দুপুরেই পানি ১৪ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার ছিলো বলে জানা গেছে। বিপদসীমা থেকে মাত্র পয়েন্ট ১৯ সেন্টিমিটার নিচে থাকা পানি যে কোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পদ্মা নদীর পানি প্রতি তিন ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে। এইভাবে চলতে থাকলে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে খুব বেশি সময় নেবে না।

পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে নদীটির প্রধান শাখা গড়াই নদেও পানির প্রবাহ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। ইতোমধ্যেই পদ্মা নদী ও গড়াই নদের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও বাঁধগুলোতে নজর রাখা শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

farakka barrage

এর আগে ফারাক্কা বাঁধের ১০৪টি গেটের মধ্যে ৯৫টি গেটই খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। বলা হয়েছে, বিহার রাজ্যের বন্যার পানি কমার কোনো অগ্রগতি দেখা না গেলে বাঁধের আরো গেট খুলে দেয়া হতে পারে।

ফারাক্কা বাঁধের এই গেটগুলো খুলে দেয়ার ফলে প্রায় ১১ লাখ কিউসেক পানি সরে গিয়ে বিহার প্রদেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। রাজ্যটিতে প্রায় ১০ লাখ লোক পানিবন্দী অবস্থায় আছে।

তবে এই ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশের ভেতরে এসে বাংলাদেশ অংশে পদ্মায় পানি প্রবাহ বাড়ালেও তা বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে না বলে মনে করছেন বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র এবং যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তারা। ফারাক্কা বাঁধের ১০৪টি গেটের ১০০টি খুলে দেয়া হলেও বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির খুব একটা অবনতি ঘটবে না বলেই মনে করছেন এই কর্মকর্তারা।

দেশের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র এবং যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি বছর এই সময় ফারাক্কার গেট খোলাই থাকে। সুতরাং নতুন করে গেট খোলার কিছু নেই।

ভারতের কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র সমীর সিনহাও জানান, বছরের অন্য সুময়ের তুলনায় বর্ষাকালে ফারাক্কায় বেশি গেট খোলা থাকে। সুতরাং এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তিনি এটিকে একটি সাধারণ ঘটনা বলেই উল্লেখ করেন।

এদিকে সমীর সিনহা জানান, ফারাক্কা বাঁধের ১০০টি গেট খুলে দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশকে আগেই নোটিশ দিয়ে জানানো হয়েছে। এবং একইসাথে ফারাক্কা নিয়ে পরামর্শও হয়েছে।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেয়া হলে যে ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করবে তাতে পদ্মায় পানি বাড়লেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন

জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের দুদিনের ধর্মঘটের ডাক

হানিফ: বিএনপি পাকিস্তানি আদর্শের রাজনীতি করে

‘জিয়ার স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’

‘যে কোনো সময় গুলশানের হোতারা গ্রেফতার হবে’

ফারাক্কার দরজা উম্মুক্ত: দ্রুত বাড়ছে পদ্মার পানি

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.