আপনি পড়ছেন

তাইওয়ান নিয়ে কমিউনিস্ট চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে সেই খবর একাধিকার প্রকাশিতও হয়েছে। এদিকে, সম্প্রতি আফগানিস্তানে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে তাইওয়ান ইস্যুটি নিজেদের ইমেজ রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

jinping wen and bidenযথাক্রমে চীন, তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতা

আফগানিস্তানে হাজারো আফগান নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রকে নানাভাবে সহায়তা করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র তাদের রক্ষার দায়িত্বে থাকলেও তারা সেখান থেকে পিঠটান দিয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য মিত্রদেরও এটা ভাবার যৌক্তিক কারণে রয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাদেরও এমন বিপদে ফেলে যেতে পারে। আর ওয়াশিংটনের জন্য তেমনি একটি পরীক্ষা ক্ষেত্র তাইওয়ান। ফলে অঞ্চলটিতে চীনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের ভূমিকা পালন করবে, এখন সেদিকেই নজর তার মিত্রদের। এক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন ব্যর্থ হলে এই অঞ্চলে ছড়ি ঘুরাবে চীনের কমিউনিস্ট সরকার। যা অঞ্চেলের নিরাত্তার জন্য হুমকি তৈরি করবে।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা তাইওয়ানকে পুনরায় দখল করার বিষয়ে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে আসছে। চলতি মাসেই তাইওয়ানের আকাশসীমায় প্রায় ২৫০টিরও বেশি সামরিক বিমান উড়িয়েছে বেইজিং। এর মানে তাইওয়ান দখলে প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। যা এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কেবল মৌখিকভাবেই তাইপেকে সমর্থন করছে। কার্যত এতে কোন লাভ হচ্ছে না।

বরং যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে সমর্থন করায় বেইজিং আরও বেশি বেপরোয়া আচরণ করছে। তারা চাচ্ছে দ্রুত অঞ্চলটি দখলে নিতে। নিউজ উইক বলছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১০০তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বলেছিলেন যে, 'চীনা জনগণের আকাঙ্ক্ষা তাইওয়ান প্রশ্নের আশু সমাধান। এর মাধ্যমে মাতৃভূমি পুনরায় একত্রিত হবে। আর ঐতিহাসিকভাবে এটাই একমাত্র সমাধান।' যদিও তাইপেও নিজকে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে দেখে। যদিও অঞ্চলটির বাণিজ্যের একটি বড় অংশই (২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২৬ শতাংশ) চীনের মূল ভূখণ্ডের সাথে।

কিন্তু চীন-তাইওয়ানের এই বাণিজ্য দুটি কারণে সংকটে পড়তে পারে। প্রথমত, জাতীয়তাবাদীদের সন্তুষ্ট করতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং যদি তাইপেইকে একত্রিত করতে চান। দ্বিতীয়ত, এই পরিণতিতে তাইওয়ানের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ আসলে তা বড় ধরনের যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।

সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের করণীয় হলো- তাইওয়ানের স্বাধীনতা রক্ষা করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া। আর সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার হাতে পরমাণু চালিত সাবমেরিন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর করেছে। কিন্তু একাধিক মার্কিন এডমিরাল জানিয়েছেন, অঞ্চলটিতে চীনের মত শক্তিশালী দেশকে মোকাবিলা করতে যে পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম প্রয়োজন তার যোগান নেই। যুক্তরাষ্ট্রকে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। অন্যথায় চীন যদি তাইপেইকে একত্রিত করে ফেলে তখন সেটা আঞ্চলিক সংকটে রূপ নিয়ে। যা অস্থির করে তুলতে পারে সমগ্র এশিয়া-প্যাসেফিক অঞ্চলকে।

প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন ৮ জানুয়ারি ১৭৯০ সালে কংগ্রেসে তার প্রথম বার্ষিক ভাষণে বলেছিলেন, 'যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া শান্তি রক্ষার অন্যতম কার্যকরী মাধ্যম।' মূল বিষয় হল, তাইওয়ানকে শক্তিশালী করা এবং যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা। যেন চীনের পক্ষে থেকে অঞ্চলটিকে জয় করার চেষ্টা নিরুৎসাহিত করা যায়।

নিউজ উইক জানিয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও'ব্রায়েন এবং অ্যালেক্স গ্রে সম্প্রতি দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের লিখেছেন, মার্কিন ও ইউরোপীয় মিত্রদের তাইওয়ানকে অ্যান্টি-শিপ উইপেন (জাহাজ-বিরোধী অস্ত্র), এয়ার-ড্রপড ওশেন মাইন এবং কাঁধে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার সরবরাহ করা উচিত। সেই সঙ্গে চীন কর্তৃক জোরপূর্বক অঞ্চলটির দখল রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে তার মিত্রদের নিয়ে একটি সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

যাইহোক, তাইওয়ান একটি দ্বীপ হিসেবে ওই অঞ্চলে চীনের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। আর চীন তার অর্থনীতির জন্য সমুদ্র পথের ওপর নির্ভরশীল। চীন যদি তাইওয়ানের সঙ্গে সংঘাতে যায় আর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যদি অঞ্চলটির পাশে থাকে তাহলে ওই অঞ্চলে চীন বা তার মিত্রদের কোন জাহাজ চলাচল করতে সাহস পাবে না। কিন্তু, যেকোনো চীনা হুমকির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ান নৌবাহিনী পাল্টা হুমকি দিতে পারে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাপান, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডস সামুদ্রিক মহড়া তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের আগ্রাসন মোকাবেলায় একটি ভাল উদাহরণ বলে মনে হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নৌ কর্মকর্তা কার্লোস ডেল তোরো জানিয়েছেন, অঞ্চলটিতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বেশ স্পষ্ট, তাহলো- 'চীনের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ নয়'।

তোরো আরও বলেন, 'কেউ সংঘাতে যেতে চায় না। তাইওয়ান দখল করাসহ চীন অন্যায়ভাবে যা অর্জন করার চেষ্টা করছে, তা থেকে তাদের বিরত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই এটা গুরুত্বপূর্ণ ... যে আমরা এখনই প্রস্তুতি নিচ্ছি, যেমনটা প্রয়োজন। আর এটা চীনসহ বিশ্বের যেকোন দেশ যখনই করেছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। সেটা গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়সঙ্গত অধীকার রক্ষার জন্য।'

সূত্র: এএনআই

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.