‘ইরানে হামলার পরিকল্পনা’ নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন নেতানিয়াহু

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আসন্ন বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের একগুচ্ছ পরিকল্পনা পেশ করবেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আগামী ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। শনিবার ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম কান-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এনবিসি নিউজকে উদ্ধৃত করে ওই সম্প্রচার মাধ্যমটি জানায়, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্য ট্রাম্পের সামনে তুলে ধরবেন নেতানিয়াহু। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির তুলনায় এবার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর বেশি জোর দিচ্ছে ইসরায়েল। তেহরান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে এবং ইরানের দিক থেকে হুমকি বাড়ছে বলে মনে করছে তেল আবিব।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ‘তেল আবিব দাবি করছে যে পূর্ববর্তী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত উৎপাদন কেন্দ্রগুলো দ্রুত মেরামত করছে ইরান। একই সঙ্গে তারা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সচল করার কাজও চালিয়ে যাচ্ছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আলোচ্যসূচিতে থাকা দৃশ্যপটগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের একতরফা হামলা, যুক্তরাষ্ট্রের সীমিত সমর্থন আদায়, যৌথ সামরিক অভিযান পরিচালনা অথবা ইরানের অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি মার্কিন হামলা।’

তেল আবিবের ধারণা, ‘বাধা দেওয়া না হলে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বেড়ে মাসে তিন হাজারে দাঁড়াতে পারে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বৈঠকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, বিশেষ করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলোর পুনর্বাসন এবং আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলোকে তেহরানের অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টিও আলোচনায় আসবে।

প্রতিবেদনে সাবেক মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে যে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে কোনো মতবিরোধ বা বিপর্যয় দেখা দিলে তা ইরানের বিরুদ্ধে নতুন সামরিক পদক্ষেপে ট্রাম্পের পূর্ণ সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন তেহরানের সামরিক, পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনা এবং জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে আচমকা হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে তেহরানও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে বোমা বর্ষণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে ১২ দিনব্যাপী এই সংঘাতের অবসান ঘটে।