আপনি পড়ছেন

তিক্ত সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান ও মিয়ানমারের মধ্যে পুনরায় সামরিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে চলতি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে। কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধি দল মিয়ানমার সফর করেছে। এই সফরের কথা জানিয়েছে দ্য ইকোনমিক টাইমস।

pakistan myanmarপাকিস্তান ও মিয়ানমারের পতাকা

সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, পাকিস্তানের ১০ সদস্যের একটি দল মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা। সফরে দুই দেশ উন্নত অস্ত্র প্রযুক্তি, বিমান মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নৌ যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করে। এ ছাড়া আপগ্রেডেড জেএফ-১৭ বিমান এবং এয়ার টু সারফেস মিসাইল বিক্রির বিষয়েও আলোচনা হয়।

কোন ঘোষণা ছাড়াই এমন সফরকে ঘিরে দেশ দুটির প্রতিবেশীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ তাদের আশঙ্কা- দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক নিজেদের ইচ্ছায় নয় বরং চীনের নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

ধারণা করা হচ্ছে যে, চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে ব্যবহার করে পাকিস্তান নিজেদের সাব-ওয়ারফেয়ার ইকুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট করতে চায়। আর চীন চাইছে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের ব্যবহার কমিয়ে তাদের অস্ত্রের বিক্রি বাড়ানো। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের কাঁধে বন্ধুক রেখে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কাছেও অস্ত্র বিক্রি করতে।

ঘোষণা ছাড়াই পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলের মিয়ানমার সফর বিস্মিত করেছে বিশ্লেষকদেরও। কারণ, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার জেরে পাকিস্তান-মিয়ানমারের মধ্যে প্রায় অর্ধ দশক ধরে তিক্ত সম্পর্ক অব্যাহত ছিলো।

এ ছাড়া আরাকানের কিছু গোষ্ঠীকে পাকিস্তান অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করছে- মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগও তোলা হয়েছিলো। এমন বৈরি সম্পর্কের পরেও কোনো ঘোষণা ছাড়াই তাদের বৈঠক তাই নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

গত কয়েক বছরে চীন তার প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদন ও রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত করেছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এর প্রতিবেদন বলছে বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ চীন! এসআইপিআরআই এও ইঙ্গিত করেছে যে, বেইজিং হয়তো ‘হাইপারসনিক মিসাইল সিস্টেম’ও অর্জন করেছে। এটি এমন এক প্রযুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র নিজে যা এখনও আয়ত্ত করতে পারেনি।

শুধু উৎপাদন নয়, চীন গত এক দশকে সামরিক খাতের বিক্রি বাড়াতে তাদের বাজার প্রসারিত করেছে। চীন থেকে অস্ত্র আমদানি করা বেশিরভাগ দেশই দক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকার, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ত্রেতা পাকিস্তান।

তবে এসআইপিআরআই-এর প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯-২০২০ সময়ে চীনের অস্ত্র রপ্তানি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একবছরে তাদের মোট রপ্তানি ৫.৫ শতাংশ থেকে কমে ৫.২ শতাংশে নেমে এসেছে। স্বল্প খরচে নিম্নমানের প্রতিরক্ষা সামগ্রী তৈরির ফলে চীনের অস্ত্র রপ্তানি কমে গেছে বলে জানা গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেদের রপ্তানি বাণিজ্যের দুয়ারকে প্রসারিত করতে আবারও উদ্যোগী হয়েছে বেইজিং। মিয়ানমার তাদের অস্ত্র বিক্রির জন্য বিশাল এক বাজার। কিন্তু দেশটিতে গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে সামরিক সরকার, যাদের ওপর দেশটির সাধারণ নাগরিক ও আন্তর্জাতিক মহল ক্ষিপ্ত।

এমন একটি অবস্থায় মিয়ানমারের কাছে সরাসরি অস্ত্র বিক্রি না করে পাকিস্তানের মতো অনুগত রাষ্ট্রের মাধ্যমে মিয়ানমারের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করতে চাইছে চীন। ফলে বৈরিতা থাকা সত্ত্বেও কোনো ঘোষণা ছাড়াই দেশ দুটির মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করে দিয়েছে বেইজিং।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.