জাতিসংঘে আফগান আসনের দাবিদার তালেবান

জাতিসংঘে আফগানিস্তানের জন্য যে আসন বরাদ্দ রয়েছে, নিয়মানুযায়ী বর্তমানে সেটির দাবিদার আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত সরকার। সেখানে দেশটির স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এমন কারও থাকা উচিত, যে প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতায় থাকা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে বা সরকার কর্তৃক স্বীকৃত। গতকাল রোববার তালেবানের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়।

রোববার তালেবানের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়

তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন টুইটারে বলেন, ইসলামিক আমিরাত সরকারের সার্বভৌমত্ব রয়েছে। পুরো সীমান্তের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং সর্বোপরি জনগণের সমর্থন রয়েছে। বিষয়গুলো একটি সরকারের স্বীকৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী গোলাম মোহাম্মদ ইসাকজাই জাতিসংঘে দেশটির দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাইছেন। এ কারণেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত কোনো দেশে সরকার পতনের পর সে দেশের প্রতিনিধি এমনিতেই পাল্টে যায়। কিন্তু ইসাকজাইয়ের ব্যতিক্রমী আচরণে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ নয় সদস্যের জাতিসংঘের একটি কমিটি বিষয়টি যাচাই করে দেখবে। আশা করা হচ্ছে এ বছর শেষ হওয়ার আগেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের সময়ও প্রতিনিধিত্ব নিয়ে দুই পক্ষের টানাপড়েন লক্ষ্য করা গিয়েছিল। আশরাফ ঘানি সরকারের প্রতিনিধি গোলাম ইসাকজাই সে সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। অন্যদিকে তালেবান সরকারও তাদের প্রতিনিধি পাঠাতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল।

সে সময়ও সুহাইল শাহিন বলেছিলেন, কাবুল প্রশাসনের কোনো অস্তিত্ব নেই। সরকার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনায় যা কিছু দরকার, সেগুলোর কিছুই নেই তাদের। উল্টোদিকে, ইসলামিক আমিরাত হিসেবে যাত্রা শুরু করা আফগানিস্তানের নতুন সরকারে সব কিছুই আছে, যা একটি সরকারে থাকা দরকার। তাই তালেবান সরকারই আফগান জনগণের একমাত্র এবং উপযুক্ত প্রতিনিধি।

তারপরও আফগানিস্তানের আসনটি তালেবান শাসকগোষ্ঠীর প্রতিনিধিকে দেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেয় জাতিসংঘ। পাশাপাশি আফগানিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ ইসাকজাইয়ের মেয়াদও বাড়ায় সংস্থাটি। তবে শেষ পর্যন্ত সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে কথা বলতে দেয়া হয়নি ইসাকজাইকে।