অথচ শেষ দেখে ফেলেছিলেন মেসি

খবরটা ছড়িয়ে গেছে আগেই। ফুটবল বিশ্লেষক ও পন্ডিতদের অনুমানের তির ছিল লিওনেল মেসির দিকেই। অপেক্ষা ছিল কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। সেটাও এলো সোমবার রাতে। প্যারিসের জমকালো অনুষ্ঠানে ২০২১ সালের ব্যালন ডি'অর জয়ী হিসেবে আর্জেন্টিনা অধিনায়কের নাম ঘোষণা করা হয়।

এনিয়ে সপ্তমবার ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট উঠল মেসির হাতে। সর্বোচ্চ ট্রফি জয়ে পিএসজি সুপারস্টার নিজেকে নিয়ে গেলেন নতুন উচ্চতায়। এখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার জিতেছেন ব্যালন ডি'অর। গত ১৪ বছরে এই দুজনের বাইরে এটা জিতেছেন কেবল লুকা মডরিচ। ২০১৮ সালে।

গত বছর অবশ্য বর্ষসেরার প্রবল দাবিদার ছিলেন রবার্ট লেভানডফস্কি। বায়ার্ন মিউনিখের পোলিস স্ট্রাইকারের দুর্ভাগ্য, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছর দেওয়া হয়নি ব্যালন ডি'অর। তবে ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কার জিতে সেই আক্ষেপ কিছুটা হলেও দূর করেন লেভা। এবারও সম্ভাবনা ছিল তার। কিন্তু গেরে গেলেন মেসির কাছে। সম্ভাবনা জাগিয়ে হারলেন চেলসির ইতালিয়ান মিডফিল্ডার জর্জিনহোও।

ফুটবল দুনিয়ার ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের সচেয়ে বড় স্বীকৃতি সপ্তমবার পেলে সেটা হবে পাগলামী। খোদ মেসিই সেটা বলেছিলেন। কারণ এই শতাব্দীতে আর কোনো বছরই ব্যালন ডি'অর জয়ের এতোজন দাবিদার ছিলেন না। উন্মুক্ত এই লড়াইয়ের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে কোপা আমেরিকা। মেসির হাত ধরেই ২৮ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে প্রথমবার কোনো ট্রফি জেতে আর্জেন্টিনা।

বছর শেষে এলো আরো একটা বড় সুখবর। ব্যালন ডি'অরের সাত নম্বর শিরোপা। অথচ দুই বছর আগেও মেসি ভেবেছিলেন এটাই শেষ মুকুট। সোমবার রাতে বর্ষসেরার মুকুট হাতে নিয়ে ৩৪ বছর বয়সী মেসি বলেছেন, 'এখানে আবার আসতে পারাটা অবিশ্বাস্য। দুই বছর আগেও ভেবেছিলাম এবারই শেষ। কোপা আমেরিকা জয়ই চাবিকাঠি।আবারও ফ্রান্স ফুটবলের ব্যালন ডি’অর জিতে আমি সত্যিই গর্বিত।'

বরাবরের মতো এবারও মেসি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন তাদের প্রতি যারা এটা জয়ে রেখেছেন নেপথ্যে ভূমিকা। মেসি বলেছেন, 'আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার পরিবার, বন্ধুবন্ধাব এবং যারা আমাকে অনুসরণ করেন ও সবসময় আমাকে সমর্থন করেন। তাদের ছাড়া আমি ব্যালন ডি'অর জিততে পারতাম না।'

মেসি আগের ছয়বার ব্যালন ডি'অর জিতেছেন বার্সেলোনায় থাকাকালীন। তন্মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত টানা চারবার। এরপর ২০১৫ ও ২০১৯ সালে। গেল আগস্টে বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেন তিনি। প্যারিসে আসার আগে তিনি আর্জেন্টিনার স্বপ্নপূরণ করেন। তার হাত ধরেই ২৮ বছর পর কোপা আমেরিকা জেতে আকাশি-নীল জার্সিধারীরা।