চীন-জার্মানি সুসম্পর্কের নেপথ্যে বিনিয়োগ

সদ্য সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছেন। তার ক্ষমতার ১৬ বছরে কয়েকটি বিষয়ে চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়েছেন। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনাসহ ‘বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ অবলম্বন করেন তিনি। চীন-জার্মানি সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে মূলত বিনিয়োগের মাধ্যমে। এভাবেই চীনের সাথে তার সম্পর্ককে উন্নীত করেছেন মারকেল। হংকংভিত্তিক ইজিনসাইট ডটকমের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

শি জিনপিং ও অ্যাঞ্জেলা মারকেল

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ১০ বছর ধরে চীন ও জার্মানি নিয়মিত আন্তঃসরকার আলোচনা করেছে। করোনাভাইরাস মহামারিজনিত কারণে চলতি বছরের এপ্রিলে সর্বশেষ আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।

খবর বলছে, ২০১৫ সাল থেকে জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার চীন। ২০২০ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের মূল্য ছিল ২১২ বিলিয়ন ইউরো। ওই বছরের ডিসেম্বরে স্বাক্ষরিত ইইউ-চীন কমপ্রিহেনসিভ এগ্রিমেন্ট অন ইনভেস্টমেন্ট (সিএআই) নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে জার্মানিই নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছিল। তবে বেইজিং তার কিছু সদস্যকে অনুমোদন দেওয়ার পর ইউরোপীয় সংসদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে।

মারকেল

প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানির অর্থনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন, আগামী ১০ বছরে চীন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ৩০ শতাংশ দখল করবে। চীনা পরিসংখ্যান অনুসারে, জার্মানি চীনে সবচেয়ে বড় ইইউ বিনিয়োগকারী। চীনে জার্মানির ৯০ বিলিয়নের মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে, যা চীনে মোট ইইউ বিনিয়োগের ২৫ শতাংশ। দেশটিতে প্রায় ৫ হাজার জার্মান ফার্ম রয়েছে। জার্মানি চীনে রাসায়নিক, অটোমোবাইল ও যন্ত্র শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। এসব খাতে জার্মানির বিশেষ প্রযুক্তিসমৃদ্ধ কর্মপরিকল্পনা রয়েছে।

ভক্সওয়াগন কোম্পানি জার্মানির চেয়ে চীনে বেশি গাড়ি বিক্রি করে। জার্মান সেন্টার ফর অটোমোটিভ রিসার্চ (সিএআর) দ্বারা পরিচালিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০২০ সালে জার্মানির বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা ভক্সওয়াগন, বিএমডব্লিউ ও ডেইমলার এর বৈশ্বিক গাড়ি বিক্রির ৩৮ শতাংশের জন্য চীনের অবদান ছিল।

খবরে বলা হচ্ছে, কোভিডের কারণে ২০২০ সালে বেশিরভাগ বৈশ্বিক বাজার হ্রাস পেলেও চীনে বিএমডব্লিউ এবং ডেইমলার এর গাড়ি বিক্রি যথাক্রমে ৭.৪ শতাংশ এবং ১১.৭ শতাংশ বেড়েছে। এটা দুই কোম্পানির বিক্রিতে রেকর্ড।