নোবেলজয়ী অভিজিৎ: অর্থনীতি বিধ্বস্ত, চরম কষ্টে ভারতীয়রা

ভয়ানক কষ্টে আছে ভারতের মানুষ। অর্থনীতি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। কোভিড হানা দেয়ার আগে যে পর্যায়ে ছিল, এখন পর্যন্ত সেখানে ফেরা হয়নি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, নিজেদের স্বপ্ন ধীরে ধীরে ছোট করে আনতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গুজরাটের আহমেদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল সমাবেশে এসব কথা বলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়

আমেরিকার প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় এমআইটিতে অধ্যাপনা করেন অভিজিৎ। সম্প্রতি কয়েকদিনের জন্য এসে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের সাথে। সেখানেই তার চোখে ধরা পড়েছে এমন চরম দুর্দশা।

নোবেলজয়ী অধ্যাপক আরো বলেন, এই মুহূর্তে চরম কষ্টে রয়েছি আমরা। করোনা আঘাত হানা আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালেও অর্থনীতি যেখানে দাঁড়িয়েছিল, এখনকার অবস্থান তার থেকেও অনেক নিচে। সেটা ঠিক কতখানি, তা নিশ্চিতভাবে হয়তো জানি না। কিন্তু আমার ধারণা অনেকখানি।

ভারতের অর্থনীতি নিম্নমুখী

কাউকে দোষারোপ করা উদ্দেশ্য নয় মন্তব্য করে তিনি জানান, গ্রাম বাংলায় ঘুরে সাধারণ মানুষের গল্প শোনার সময়ে তাদের স্বপ্ন চুরমার হওয়ার এবং অনেক ক্ষেত্রে স্বপ্নের ছোট্ট গণ্ডিকে আরো ছোট করে আনতে বাধ্য হওয়ার নির্মম বাস্তবতা ধরা পড়েছে তার চোখে।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ যখন একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে গিয়ে এসব তথ্য বের করে এনেছেন, তখন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, অর্থনীতি ফের মুখ তুলতে শুরু করেছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, প্রথম ত্রৈমাসিকে ২০.১ শতাংশ লাফের পরে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় তিন মাসেও (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৮.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মুখ দেখেছে দেশটির অর্থনীতি। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে দ্রুততম বৃদ্ধির শিরোপা ধরে রেখেছে ভারত। শুধু তাই নয়, ছয় মাসের এ বৃদ্ধির দৌলতে দেশের অর্থনীতির বহর করোনা-পূর্ববর্তী মাপকে পেরিয়ে গেছে বলেও দাবি করছে মোদি সরকার।

তবে দেশটির বিরোধী দলগুলো এবং অর্থনীতিবিদদের একাংশ শুরু থেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, প্রথম ত্রৈমাসিকে ২০.১ শতাংশ বৃদ্ধি এসেছিল আগের বছরের একই সময়ে ২৪.৪ শতাংশ সঙ্কোচনের সঙ্গে তুলনার ফলে। দ্বিতীয় তিন মাসেও তুলনার ভিত আগের বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৭.৪ শতাংশ চুপসে যাওয়া অর্থনীতি। পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম অভিযোগ করেছেন, ‘অর্থনীতির বহু ক্ষেত্র এখনও পঙ্গু এবং সাহায্যপ্রত্যাশী।’