এহুদ বারাক: তেল আবিবের ইরাননীতি ভুলে ভরা

ইসরায়েলের বর্তমান ইরাননীতি স্রেফ একটি ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক ওয়াইনেট নিউজে প্রকাশিত বিশেষ এক নিবন্ধে এ কথা বলেন।

ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক

নিবন্ধে এহুদ বারাক বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের কথা ও কাজের মধ্যে অসহনীয় ব্যবধান ছিল। তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনের সাথে সংঘর্ষের পথ বেছে নিয়েছিলেন। এর ফলে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি বাড়ানোর একটি সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম করতে পারতো।

এহুদ বারাক মনে করেন, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাহারের বিষয়টি ইরানের জন্য লাভজনক হয়ে দাঁড়ায়। এটি তেহরানের জন্য পারমাণবিক গবেষণা বাড়ানোর একটি সুযোগ হিসেবে কাজ করে। ২০১৮ সালে নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চুক্তি থেকে সরে আসার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু এ চুক্তি থেকে ফিরে আসার ফলে ইরান তাদের পরমাণু কার্যক্রমে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায়। অন্যদিকে চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করতে শুরু করে।

নেতানিয়াহু ও এহুদ বারাক, ফাইল ছবি

সবচেয়ে খারাপ যেটি হয়েছে, সেটি হচ্ছে, নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথভাবে প্লান বি প্রস্তুত করতেও ব্যর্থ হয়েছেন। অন্তত এটি বাস্তবায়িত হলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বহু বছর পিছিয়ে যেত। কিন্তু তা ব্যর্থ হওয়ার সুযোগে তেহরান পারমাণবিক লক্ষ্যের দিকে অনেকখানি অগ্রসর হয়ে যায়।

নিজের ধারণা ব্যক্ত করে এহুদ বারাক বলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে চায়, তবে সেগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল বা অন্য কোনো প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার ইচ্ছে তাদের নেই। কেবলমাত্র নিজেদের ভবিষ্যত এবং কাজ করার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যই তারা এগুলোর উপস্থিতি রাখতে চায়।

এ পরিস্থিতিতে ইরানকে পারমাণবিক সীমানায় পৌঁছাতে বাধা দিতে ইসরায়েলকে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। এর জন্য হাতে সময়ও নেই। জনগণের মতবিরোধ ও পারস্পরিক দোষারোপের খেলায় এখনই এটি সম্ভব না হলে পরে আরো বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে বলেই মনে করেন ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক।