মুরাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ রাষ্ট্রপতির, প্রজ্ঞাপন জারি

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের দেয়া পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাতেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। নারীদের বিরুদ্ধে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও বেফাঁস বাক্যবাণের জেরে পুরো দেশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মুরাদ হাসান পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন।

ডা. মুরাদ হাসান

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। অবিলম্বে এই পদত্যাগ কার্যকর হবে।

একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। সংবিধান, আদালত, সংস্কৃতি অঙ্গন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, নারীসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত ও অশ্লীল মন্তব্য করেছেন তিনি। এর মধ্যেই দুই বছরের পুরোনো একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়, যাতে একজন অভিনেত্রীর সাথে অবমাননাকর শব্দ প্রয়োগের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে নিজের অন্যায় কাজে ব্যবহারেরও ইঙ্গিত ছিল।

ইমন-মাহি ও ডা. মুরাদ হাসান

এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার সকালেই পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পৌঁছে দেয়া হয়। পরে সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতিসাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো পদত্যাগপত্রে মুরাদ বলেন, আমাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। আমি অদ্য ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক। এমতাবস্থায় আপনার নিকট বিনীত নিবেদন, আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগপত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।

মন্ত্রিসভা ছাড়ার দিনেই জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের পদ হারিয়েছেন ডা. হাসান মুরাদ। বলা হচ্ছে, এর ধারাবাহিকতায় তিনি দল থেকেও বহিষ্কার হবেন। দলের পরবর্তী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আবার দল থেকে বহিষ্কার হলে সংসদ সদস্য পদও হারাতে পারেন তিনি।

এদিকে, মঙ্গলবার রাতেই তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুলিয়াস সিজার তালুকদার। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগটি জিডি হিসেবে নেয়া হয়েছে। এর তদন্ত চলছে।