আগামী ৫০ বছরে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে চায় ঢাকা-দিল্লি

বিদ্যমান সুসম্পর্ক বজায় রেখে সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে চায় বাংলাদেশ-ভারত। আজ বুধবার এ কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এর আগে রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা-কোবিন্দ সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মোমেন ও শাহরিয়ার আলম। সেখান থেকে বেরিয়ে মোমেন বলেন, ভারতের সঙ্গে ৫০ বছরের সুসম্পর্ক, এটি সোনালী অধ্যায়, যা অন্যদের জন্য উদাহরণ। আগামী ৫০ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরে সাহায্য করে উন্নতির শিখরে পৌঁছাব আমরা।

উভয় দেশ অনেক বড় সমস্যা আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করেছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ভারতীয় রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা কানেক্টিভিটির কথা তুলে ধরেছি, আগামীতে নতুন নতুন বিষয়ে কাজ করার কথা বলেছি। বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়। করোনা মোকাবেলায় দিল্লির সহযোগিতা তুলে ধরা হয়ছে। ঢাকা-দিল্লির গভীর সম্পর্কে এই এলাকায় শান্তি বিরাজ করছে বলেও জানানো হয়।

দুই নেতার সাক্ষাতে অন্যরা

এ সময় উভয় দেশের অব্যাহত সহযোগিতায় এই অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করা শান্তি আরো অনেক দূর যাবে মন্তব্য করে শাহরিয়ার বলেন, বিপদে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে আশ্রয় দেয়ায় ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে শেখ হাসিনা। দুর্গাপূজার পরের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হলে সংখ্যালঘু হিসেবে কাউকে ট্রিট না করার কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে গিয়ে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ বুধবার বিকেলে প্রতিবেশী এই দুই নেতার সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসেন রামনাথ কোবিন্দ। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি। সেখানে ভারতীয় রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

পরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান রামনাথ কোবিন্দ। এরপর ভারতের রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন এবং স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে সই করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সহধর্মিণী সবিতা কোবিন্দ ও কন্যা স্বাতি কোবিন্দ। দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান কোবিন্দ। সেখান থেকে হোটেল সোনারগাঁওয়ে যান তিনি।

সফরসূচি অনুযায়ী থেকে জানা যায়, ভারতের রাষ্ট্রপতি আজ রাতে বঙ্গভবনে গিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে উপহার হিসেবে দেবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। এরপর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেওয়া নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন রামনাথ।

ভারতীয় রাষ্ট্রপতি তার সফরের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল বৃহস্পতিবার তথা ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন। একই দিন বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বাংলাদেশের জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানাতে এবং বিজয়ের আনন্দ উদযাপনে ‘মহান বিজয়ের বীর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন কোবিন্দ। ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।

সফরের তৃতীয় দিন আগামী ১৭ ডিসেম্বর কালীমন্দিরের নতুন সংস্কার করা অংশের উদ্বোধন ও পরিদর্শন করবেন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। একই দিন বিকেলে ঢাকা থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি।