কারজাই: ঘানির পলায়নই সব নস্যাৎ করে দিয়েছে

আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই বলেছেন, আশরাফ ঘানির হঠাৎ করে পলায়নের কারণেই শেষ মূহূর্তের একটি চুক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। যে চুক্তির মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল। অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন কারজাই।

হামিদ কারজাই ও আশরাফ ঘানি

তিনি বলেন, কাবুল পতনের একদিন আগে তিনি এবং জাতীয় পুনর্মিলনের উচ্চ পর্যায়ের কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ঘানির সাথে দেখা করেছিলেন। সে সময় তারা ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনার জন্য অন্য ১৫ জন রাজনীতিকের সাথে পরের দিন দোহা যেতে সম্মত হন। কাতারের রাজধানীতেই তালেবান নেতাদের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল।

কারজাই বলেন, ১৫ আগস্ট শহরে গুজব ছড়িয়েছিল যে তালেবান বাহিনী শহরে প্রবেশ করছে। তারা এরই মধ্যে কাবুলের দরজায় এসে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় তিনি দোহায় তালেবানের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। তখন তালেবান নেতারা তাকে নিশ্চিত করেছিলেন যে, একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আগে তাদের কোনো বাহিনী শহরে ঢুকবে না। এ সময় তারা এ-ও বলে, নিরাপত্তা বাহিনীর উচিত তাদের অবস্থানে অবিচল থাকা। তালেবান দৃঢ়ভাবে জানায়, সরকারকে তার অবস্থানে থাকা উচিত, তাদের নড়াচড়া করা উচিত নয়। শহরে প্রবেশ করার তাদের কোনো ইচ্ছা নেই।

কারজাই বলেন, বিকেলে ঘানি যখন কাবুল ত্যাগ করেন, তখন কাবুলের পুলিশপ্রধানসহ সমস্ত নিরাপত্তা বাহিনী চলে গিয়েছিল। রাজধানীতে নিরাপত্তাবাহিনীর কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। কোনো পুলিশ কর্মকর্তা, কোনো কর্পস কমান্ডার বা অন্য কোনো ইউনিট ছিল না। তারা সবাই চলে যায়।

কারজাইয়ের মতে, ঘানির দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শেষ মুহূর্তের চুক্তিকে নষ্ট করে দিয়েছে, যা একটি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার স্থানান্তরের দিকে পরিচালিত করার কথা ছিল। তিনি বলেন, শান্তি কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের সাথে সেই সন্ধ্যায় বা পরের দিন সকালে দোহায় যাওয়ার এবং চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমি বিশ্বাস করি তালেবান নেতারাও দোহায় আমাদের জন্য একই উদ্দেশ্যে অপেক্ষা করছিলেন।

কারজাই বলেন, ঘানি পালিয়ে যাওয়ার পর কাবুলে প্রশাসনিক যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, তারই প্রেক্ষিতে তিনি তালেবানকে শহরে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি আশা করেছিলেন, এর দ্বারা বিশৃঙ্খলা এবং জনগণের সম্পত্তি লুটপাট প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এরপরই তালেবান শহরে প্রবেশ করে এবং কাবুলসহ পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার ঘোষণা দেয়।