ফিলিপাইনে টাইফুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০০

ফিলিপাইনে টাইফুনের আঘাতে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১০০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ফিলিপাইনের একটি দ্বীপ প্রদেশের গভর্নর বলেছেন, টাইফুন রাইয়ের আঘাতে সেখানে কমপক্ষে ৪৯ জন মারা গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এবং জাতীয় পুলিশ আরও অন্তত ৩৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। টাইফুন দ্বারা প্রথম আঘাতপ্রাপ্ত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দিনাগাট দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি শহরে মারা গেছে আরও ১০ জন। খবর এপি।

টাইফুনে লণ্ডভণ্ড ফিলিপাইন

বোহোল প্রদেশের গভর্নর আর্থার ইয়াপ বলেন, ঝড়ে ১০ জন নিখোঁজ এবং ১৩ জন আহত হয়েছে। মৃত্যু ও নিখোঁজের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইয়াপ প্রাদেশিক মেয়রদের দ্রুত নিরাপদ খাদ্য এবং পানীয় জল সরবরাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইয়াপ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি সর্বব্যাপী দেখা গেছে।

খবরে বলা হচ্ছে, টাইফুনটি বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার মধ্য দ্বীপের প্রদেশগুলোর মধ্য দিয়ে তাণ্ডব চালায়। সরকার বলছে, প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি রদ্রিগো দুতার্তে শনিবার ঘূর্ণিঝড় এলাকা হেলিকপ্টারে পরিদর্শন করেছেন। তিনি ৪০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। টাইফুনটি প্রতি ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বা ১২১ মাইল বেগে তাণ্ডব চালায়। ঘূর্ণিঝড়ে বোহলের নদীর তীরবর্তী শহর লোবোকে বন্যা দেখা দিয়েছে।

সেখানে বাসিন্দারা তাদের ছাদে এবং গাছে আটকা পড়েছে। পরের দিন কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে। জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় সব বাড়ির ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা উড়ে গেছে।

রাইয়ের আঘাতে অন্তত ২২৭টি শহর ও বন্দরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ পর্যন্ত ২১টি এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা হয়েছে। তিনটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি এখনও বন্ধ রয়েছে।

বৃহত্তর রোমান ক্যাথলিক জাতিতে বড়দিনের আগে টাইফুন রাই ব্যাপক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। যা ঘূর্ণিঝড়ের আগের রেকর্ডগুলো ভেঙে দিয়েছে। ২০১৩ সালের নভেম্বরে একটি ঘূর্ণিঝড়ে ৬ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি লোক মারা যায় দেশটিতে। 

প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২০টি ঝড় এবং টাইফুন ফিলিপাইনে আঘাত হানে। দ্বীপপুঞ্জটি ভূকম্পনগত দিক থেকে সক্রিয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অফ ফায়ার’ অঞ্চলে অবস্থিত, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্যোগ-প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে একটি করে তুলেছে।