অস্ত্র থাকলেও যুদ্ধ করার লোক নেই রাশিয়ার!
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেন সীমান্ত ঘিরে রাশিয়ার সেনা মোতায়েন আর অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা গেলেও জনসংখ্যাগতভাবে ভয়াবহ পতনের দিকে যাচ্ছে রাশিয়া। দেশটিতে অস্ত্র চালানোর মতো ব্যাপক জনবলের অভাব দেখা দিয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একদিকে ইউক্রেনকে হুমকি দিচ্ছেন, অপরদিকে প্রাকৃতিকভাবেই দেশটি জনসংখ্যা হ্রাসের শিকার হয়েছে। পুতিনও স্বীকার করেছেন, একটি জনবসতিপূর্ণ রাশিয়ার ভাবনা তাকে সবচেয়ে বেশি তাড়িত করে।
অস্ত্র থাকলেও যুদ্ধ করার মানুষ নেই রাশিয়ার!
ফরেন পলিসির প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ লোক প্রাণ হারিয়েছে রাশিয়ায়। এর মধ্যে করোনাভাইরাসেই মারা গেছে তিন লাখের বেশি মানুষ। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে জনসংখ্যাগত পতনের দীর্ঘ এবং বেদনাদায়ক যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে দেশটি। আর এ কারণেই আপাতদৃষ্টিতে পুতিনের সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভেস্তে যেতে চলেছে, জটিল করে তুলেছে তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
রাশিয়ার জনসংখ্যাগত পতনের শিকড় রচিত হয়েছিল ১৯৯০-এর দশকে। সোভিয়েত-পরবর্তী একটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পিত অর্থনীতি থেকে পুঁজিবাদী, বাজার-ভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় দেশটিতে। ওই সময়ের অর্থনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাপক বেকারত্ব এবং মদ্যপানের মহামারির মতো সমস্যাগুলো রাশিয়ার পুরুষদের গড় আয়ু নামিয়েছে সর্বনিন্মে।
১৯৯৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত সন্তান উর্বরতার হার (একজন মহিলার তার জীবদ্দশায় সন্তানের সংখ্যা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়) নেমে গেছে ১.৫ এর নিচে। অথচ জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় হার ছিল ২.১।
জনসংখ্যার হারে এই নাটকীয় এবং দীর্ঘায়িত পতনের প্রভাব এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ৩০ থেকে ৩৪ বছর বয়সের মধ্যে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ রাশিয়ান রয়েছেন যারা সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের কাছাকাছি বা ঠিক আগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
কিন্তু ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সের মধ্যে প্রায় ৬৫ লাখ মানুষ রয়েছে যারা ১৯৯০ এর দশকের শেষের বিশৃঙ্খলার সময়ে জন্ম নিয়েছিল। সন্তান ধারণ করতে সক্ষম মানুষের এই ক্ষুদ্র ভিত্তির মানে জন্মহার প্রায় হ্রাস পেতে চলেছে। ঘটেছেও তাই। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে প্রাকৃতিকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের পর রাশিয়ার জনসংখ্যা আবার ২০১৯ সালে সংকুচিত হতে শুরু করে। অদূর ভবিষ্যতে আরও নামতে থাকবে এই নিম্নহার।
জনসংখ্যায় নেমে আসা এ অন্ধকার আরও ঘনীভূত করেছে কোভিড-১৯ মহামারি। ক্রেমলিনের কোভিড-১৯ এর ক্ষমতা অস্বীকার এবং পশ্চিমজুড়ে ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে ছড়ানো বিভ্রান্তি বুমেরাংয়ের মতো তার নিজস্ব জনসংখ্যাকেই আক্রান্ত করেছে। তাদের কোভিড-টিকা নেওয়ার হার উন্নত বিশ্বে সর্বনিম্ন।
সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। কাগজে কলমে কোভিডে দেশটির মৃতের সংখ্যা তিন লাখ হলেও দ্য ইকোনমিস্ট ধারণা করছে, এ সংখ্যা সন্দেহজনক। রাশিয়ায় মহামারিটিতে মারা গেছে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ।
এদিকে রাশিয়ার অর্থনীতি ২০১৪ সালের তুলনায় এখনও শিশুই রয়েছে। সেই সময়ে ক্রিমিয়ার দখলের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার জিডিপি ২৫ শতাংশেরও বেশি কমাতে ভূমিকা রেখেছিল। আর এখন রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার খড়গ অপেক্ষা করছে, তা বাস্তবায়িত হলে রাশিয়ার জন্মহার হবে আরও হতাশাজনক।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.