যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী!

ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তা ইভান আরেফিভ বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণসহ যা কিছু ঘটুক না কেন, আমরা তার জন্য প্রস্তুত। শনিবারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। ইউক্রেনের দিকে সীমান্তে অবস্থান করছে রুশ বাহিনী। তাতে উদ্বিগ্ন পশ্চিমা বিশ্ব। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই রাশিয়াকে ‘দ্রুত, কঠোর এবং ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া’ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউক্রেনের মিত্ররা। এ অবস্থায় মানসিকভাবে শক্ত অবস্থানে রয়েছে ইউক্রেনীয় পক্ষও।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পশ্চিমা দেশগুলোর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া সাবেক প্রজাতন্ত্রের পূর্ব দিকে প্রায় এক লাখ সৈন্যের সমাবেশ ঘটিয়েছে। সাক্ষাৎকারে ইভান বলেন, পুতিন দনবাস ও ক্রিমিয়ার রাশিয়া-অধিকৃত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি স্থল করিডোর তৈরির স্বপ্ন দেখছেন। প্রাণ থাকতে আমরা তা হতে দেব না।

ইউক্রেনের চনবারে অবস্থানরত এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির কয়েকটি সুস্পষ্ট লক্ষণ রয়েছে। সৈন্যরা জানিয়েছেন, রাতে ছোট কাঠের আড়ালে কৌশলে লুকিয়ে থাকা শত্রু ট্যাংকের গর্জন শুনতে পেয়েছেন তারা। কিন্তু বাস্তব সত্য হলো- ক্রেমলিন এখান থেকে যেকোনো সময় অগ্রসর হতে পারে স্থল, সমুদ্র বা আকাশপথে। আরও বাস্তবতা হচ্ছে, এক লাখ রুশ সেনা সীমান্তে ক্যাম্প করে ইউক্রেন ঘিরে ফেলেছে।

দক্ষিণে মস্কোর সশস্ত্র বাহিনী ক্রিমিয়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারে এবং এরপর উত্তরে ও তারপর উপকূল বরাবর পূর্বদিকে অগ্রসর হতে পারে। পূর্বে রাশিয়ান ট্যাংকগুলো সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেনীয় শহর খারকিভের দিকে অগ্রসর হতে পারে। সম্ভাব্য যুদ্ধের অশুভ উন্নয়ন উত্তরে চোখ রাঙাচ্ছে। ক্রেমলিন সৈন্য, যুদ্ধবিমান এবং ভারী অস্ত্র বেলারুশে স্থানান্তরিত করেছে, যদিও সামনের মাসে বড় আকারের সামরিক মহড়ার কথা বলছে তারা।

রাশিয়ার সুদূর পূর্ব থেকে কৌশলগত ব্যাটালিয়ন এসেছে, তাদের সঙ্গে উরুগান স্ব-চালিত একাধিক রকেট লঞ্চার এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ এয়ার মিসাইল রয়েছে। এই শক্তিশালী আক্রমণাত্মক বাহিনী এখন কিয়েভ এবং তার পশ্চিমাপন্থী সরকার মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। কিয়েভের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো রাশিয়ান অনুপ্রবেশ ইউক্রেনের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখোমুখি হবে।

ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা কেন্দ্রের প্রধান সের্হি কুজান বলেন, বর্তমানে সীমান্তে পর্যাপ্ত রাশিয়ান বাহিনী দ্রুত আক্রমণের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু জয়ের জন্য পর্যাপ্ত বাহিনী তাদের নেই। ইউক্রেনের রয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার সেনা, পাশাপাশি ৪ লাখ সামরিক দেশপ্রেমিক তো রয়েছেই। অস্ত্রের দিক থেকে সারফেস টু এয়ার মিসাইল হবে ইউক্রেনের সেরা চমক এবং চলতি সপ্তাহে ব্রিটেন পাঠিয়েছে বেশকিছু ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্র।

তিনি বলছেন, যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে রাশিয়া আজভ সাগর বরাবর উপকূল খনন করেছে এবং জাহাজবিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছে। এটি রাশিয়ান উভচর অবতরণকে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন করবে। রুশ-ইউক্রেন ভয়ংকর সামরিক পটভূমির মধ্যে চোনহার হচ্ছে ইউক্রেনের শান্তিপূর্ণ বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য।