রায় প্রকাশ: গুজব-গণপিটুনি রোধে হাইকোর্টের ৫ নির্দেশনা

দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে গুজব ছড়ানো এবং গণপিটুনির ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে এর আগে ৫টি নির্দেশনা দিয়েছিল হাইকোর্ট। এবার সেই ৫ দফা নির্দেশনার রায় প্রকাশ করা হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের তৎকালীন বেঞ্চ রায়ে স্বাক্ষর করার পর এটি মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ হাইকোর্ট, ফাইল ছবি

এর আগে ২০১৯ সালের ২০ জুলাই রাজধানী ঢাকায় তাসলিমা বেগম নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন। এ বিষয়ে একই বছরের ২৬ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি করে ৫ দফা নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায়ের ৭ পৃষ্ঠার অনুলিপি তিনি হাতে পেয়েছেন। প্রকাশিত রায়ের ৫ দফা নির্দেশনা হলো—

১. পুলিশের প্রত্যেক সার্কেল অফিসার বা এএসপি তার অধীনে থাকা প্রতিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তথা ওসির সঙ্গে ৬ মাসে অন্তত একবার গণপিটুনি প্রবণতা সংক্রান্ত বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৈঠক করবেন। ২. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার প্রচার কার্যক্রম ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রচারণা অব্যাহত রাখবে, যাতে গণপিটুনির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা যায়।

৩. গুজব সৃষ্টি বা গণপিটুনিতে মানুষকে উত্তেজিত করতে পারে— সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন যেকোনো ধরনের অডিও, ভিডিও কিংবা খুদে বার্তা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এ কাজের সঙ্গে যে দুষ্কৃতকারীরা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৪. গণপিটুনির কোনো ঘটনা যখনই ঘটবে, থানার ওসি কোনো রকম দেরি না করে তখনই এফআইআর নিতে বাধ্য থাকবেন। সেইসঙ্গে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারকে অবহিত করবেন। ৫. ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম হত্যার ঘটনায় রাজধানীর উত্তর বাড্ডা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অবহেলার ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।