ইউক্রেন যুদ্ধ চীন-রাশিয়ার সম্পর্কে ছায়া ফেলেছে!
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর ছায়া ফেলতে পারে এবং কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। কিছু চীনা বুদ্ধিজীবী এবং চীনা ব্যাংক ভয়ে ভয়ে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছেন।
পুতিনের সাথে চীনের প্রেসিডেন্ট
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা ইতিহাসবিদ জু গুওকি বলেছেন, “ইউক্রেইনে ভ্লাদিমির পুতিনের হামলাকে নিন্দা জানাতে বেইজিংয়ের অনীহা উদ্বেগজনক। আমি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসবিদ। ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে ইউরোপ একটি বিশাল সংঘাতের মধ্যে চলে গিয়েছিল, যা চীনের ওপরও বিশাল প্রভাব ফেলেছিল। বিশ্ব হয়তো আর ফিরে আসবে না।”
চীনা এ ইতিহাসবিদ বলেন, “খেয়াল করুন, গত সপ্তাহ ধরে চীনা কূটনীতিক ও জনগণ কীভাবে ইউক্রেইনের যুদ্ধ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলেছে। আমি ভয় পাচ্ছি, মনে হচ্ছে আমরা এখনও অতীতের ট্র্যাজেডিগুলো থেকে শিখিনি। একজন ইতিহাসবিদ হিসেবে আমি খুবই হতাশ।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, “শনিবার জুসহ চীনা প্রখ্যাত পাঁচ ইতিহাসবিদ রাশিয়ার পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে চিঠি লিখেছে। তারা চিঠির মাধ্যমে বেইজিংকে তার অবস্থান স্পষ্ট করানোর চেষ্টা করেছেন। বিষয়টি এমন যে, রাশিয়া যা করছে তা ভুল এবং চীনের এটি বলিষ্ঠভাবে বলা উচিত।”
আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করে এমন যেকোনো কাজের বিরোধিতা চীন প্রকাশ্যে করে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই শুক্রবার তার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এক পোস্টে সে বিষয়টিই তুলে ধরেছেন। কিন্তু গত সপ্তাহে ইউক্রেইনে বেসামরিক লোকদের হত্যা এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা তীব্র হওয়ার মধ্যে বেইজিং পুতিনের কথাই ব্যক্ত করেছে যে, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর মনোযোগের প্রতিক্রিয়ায় মস্কোর এই পদক্ষেপ।
গার্ডিয়ান লিখেছে, চীনে জনমত নির্ণয় করা কঠিন। তবে গত কয়েকদিনে বেইজিংয়ের কূটনীতিকরা যখন ইউক্রেইনে যুদ্ধের ব্যাপারে একটি সুসংগত যুক্তি নিয়ে লড়াই করছেন, তখন অনেক চীনা জাতীয়তাবাদীরা অনলাইনে পুতিনের প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ রাশিয়ান নেতাকে ‘এই শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলবিদ’ বলেছেন। অন্যরা বলেছে, চীনের উচিত বর্তমান পরিস্থিতি ‘তাইওয়ানকে ফিরিয়ে নেওয়ার’ কাজে লাগানো।”
এতে আরও বলা হয়, “চীনা জনগণ যখন পুতিনের প্রশংসা করছে একই সময়ে চীনা জনগণের যুদ্ধবিরোধী পোস্টগুলো সরিয়ে নিচ্ছে না বেইজিং। যেমন উইচ্যাটে অনেকে ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করছে। রোববার পুতিন তার সামরিক বাহিনীকে রাশিয়ার পারমাণবিক প্রতিরোধ বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফলে কিছু ব্যবহারকারী ১৯৯৪ সালের একটি বিবৃতি পোস্ট করেন, যে বিবৃতি অনুযায়ী চীন সমস্ত পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রগুলোকে অনুরোধ করেছিল, পারমাণবিক অস্ত্র নেই এমন রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করতে।”
রোববার কিয়েভে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ফ্যান জিয়ানরং একটি ভিডিওতে বলেন, চীন ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে। তিনি ইউক্রেনভিত্তিক চীনা নাগরিকদের তাদের পরিচয় প্রকাশ না করার বা তাদের জাতীয়তার কোনো চিহ্ন প্রদর্শন না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। যদিও এর আগে দূতাবাস বলেছিল, নাগরিকদের তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগানোর জন্য।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্তত দুটি ব্যাংক রাশিয়ার পণ্য কেনার ব্যাপারে অর্থায়ন সীমিত করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে চীন তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি সীমাবদ্ধ করছে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়নার (১৩৯৮) কিছু ইউনিট রপ্তানির জন্য প্রস্তুত রাশিয়ান পণ্য ক্রয়ের জন্য মার্কিন ডলার-নির্ধারিত ক্রেডিট লেটার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
বেইজিংয়ের রাশিয়াপন্থী মনোভাব ইউক্রেন থেকে চীনাদের সরিয়ে নেওয়াকেও প্রভাবিত করতে পারে। ইউক্রেনের সঙ্গে চীনের গভীর অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে।
সূত্র: ইকোনমিকস টাইমস
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.