‘মল্ল যুদ্ধ’ও করছেন ইউক্রেন-রাশিয়ার সেনারা!

ইউক্রেনের যোদ্ধারা এখন সত্যিকারের লড়াইয়ে নেমেছেন। কিছু কিছু জায়গায় উভয়পক্ষের অস্ত্র ফুরিয়ে গেছে। এজন্য হাতে-হাতেও যুদ্ধ হয়েছে। গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে হাতে-হাতেই লড়াই করছেন রাশিয়া-ইউক্রেনের সেনারা। গতকাল সোমবার কিয়েভ সীমান্তের কাছাকাছি ইরপিন শহরে দুই বাহিনীর এ ‘গেরিলা যুদ্ধ’ হয়। ইরপিন শহরে যুদ্ধ করা ইউক্রেনীয় প্যারাট্রুপার লেফটেন্যান্ট স্ট্যাশ (ছদ্মনাম) বলেন, সেনারা মল্ল লড়াইও করছেন। তবে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক ও শেল বিস্ফোরণের ভয়ংকর শব্দও শোনা যায়। এফপি।

কিয়েভ সীমান্তে ইউক্রেন-রাশিয়া মল্ল লড়াই, ছবি-ফ্রান্স২৪

ইরপিনে রাশিয়ান ২০০ সেনার একটি দল, ৫০টি হালকা সাঁজোয়া যান এবং বেশ কয়েকটি ট্যাংক জমায়েত হয়ে হামলার হুমকি দিচ্ছিল। স্ট্যাশ বলেন, ‘আমরা তাদের বাইরে বের করার চেষ্টা করছি। জানি না, পারব কি না। পরিস্থিতি খুবই অস্থিতিশীল।’

রুশ বাহিনীর হামলা রুখতে কিয়েভ সীমান্তের রাস্তায় রাস্তায় লড়াই করছেন ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। সোমবার কিয়েভের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভয়াবহ লড়াইয়ের বর্ণনা দিয়েছেন কিয়েভের ইউক্রেনীয় সেনাকর্মী ও উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত থেকে পালিয়ে আসা বাসিন্দারা। তারা জানিয়েছেন, হাতে-হাতে লড়াইও হয়েছে কয়েকটি স্থানে। তারা আশঙ্কা করছেন, ভয়াবহ এ লড়াই শিগগিরই অবরুদ্ধ রাজধানীতে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কিয়েভের শিল্পশহরটি রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের সর্বশেষ প্রতিনিধিত্ব করছে। যুদ্ধ শুরুর দিন কিয়েভের আরো দূরবর্তী শহরতলী গোস্টোমেলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং প্যারাট্রুপার মোতায়েনের মাধ্যমে আক্রমণ শুরু করেছিল পুতিন বাহিনী।

রাশিয়ান কিছু সাঁজোয়া যান ধ্বংস করে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে উঠেছিল ইউক্রেনীয় সেনারা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বেলারুশ থেকে শক্তি বাড়িয়ে গত সপ্তাহের শুরুতে নতুনভাবে সংগঠিত হয়ে ফের আক্রমণ শুরু করে রুশরা। তখন থেকেই তাদের আক্রমণ গতি পেয়েছে।

এরপর গোস্টোমেলের আশপাশের একাধিক বসতি দখল করে নেয় রুশ বাহিনী। ইরপিনের বোনশহর বলে খ্যাত বুচাউ, বুকার দখল করে তারা। দুটি শহরই যেন এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। খোলস হিসেবে রয়ে গেছে শুধু রাশিয়ান সেনারা।

এসব শহর থেকে পালিয়ে গেছেন প্রায় সবাই। যারা হাঁটতে পারেন না, ধ্বংসযজ্ঞের ‘অসহায় পাহারাদার’ হিসেবে রয়ে গেছেন শুধু তারাই। ইরপিন থেকে লোকজন পালিয়েছে শনিবার থেকেই।

৩৮ বছর বয়সি ইউক্রেনীয় যোদ্ধা কনস্টান্টিন লোকমিতস্কি বললেন, রুশ সেনারা একচেটিয়াভাবে বেসামরিক লোকদের ওপর গুলি চালাতে শুরু করে। এটি আমার তৃতীয় যুদ্ধ। এ রকম কখনো ঘটেনি। প্রত্যক্ষদর্শী ইউক্রেনীয় সৈনিক ওলেক্সি চেরিকালভ বলেন, আমি রুশদের এলোমেলো সহিংসতা দেখে আতঙ্কিত ও হতবাক হয়েছি।