যুদ্ধের ১৩ দিন: ইউক্রেন-রাশিয়ার যত ক্ষয়ক্ষতি!

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট অফিসের প্রধান উপদেষ্টা এক টুইটার বিবৃতিতে দাবি করেছেন, এখন পর্যন্ত দেশটির ২০২টি স্কুল, ১ হাজার ৫০০-এর বেশি আবাসিক ভবন এবং ৩৪টি হাসপাতাল ধ্বংস কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত স্কুল

এ পরিসংখ্যান দেওয়ার আগে উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেন, ‘এটা ছিল রুশ বাহিনী কর্তৃক একবিংশ শতাব্দীর বর্বরতম হামলা। যুদ্ধের ১৩ দিনে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ এখনই সম্ভব নয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ হামলা শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে যে পরিসংখ্যান তৈরি হয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নাও হতে পারে।

এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে,পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপস্থাপন করছে না। তারপরও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

পশ্চিমা একটি সংবাদমাধ্যমের গ্রাফচিত্র বলছে, এই ১৩ দিনে রাশিয়া হারিয়েছে তাদের ১২ হাজার সেনা। ধ্বংস হয়েছে ৪৮টি যুদ্ধবিমান, ৮০টি হেলিকপ্টার, ৩০৩টি ট্যাঙ্ক, ১ হাজার ৩৬টি আর্মড ক্যারিয়ার, ৩টি নৌজাহাজ, ৪৭৪টি সাঁজোয়া যান, ৬০টি ফুয়েল ট্যাঙ্কার এবং ২৭টি এন্টি-এয়ারক্রাফট।

ইউক্রেনীয় সরকারের দাবি অনুযায়ী, ২ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন চলমান রুশ হামলায়। যুদ্ধের সময় নিজ দেশের সেনাদের মনোবলে চিড় ধরার আশঙ্কায় সেনা হতাহতের কোনো সংখ্যা সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে মার্কিন সূত্রের মতে, এ যুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবকসহ প্রায় ২ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, এই সূত্র বলছে- ১৩ দিনের যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫০০ রুশ সেনা। পক্ষান্তরে রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি অনুযায়ী, ইউক্রেনের প্রায় ৩ হাজার সেনাকে হত্যা করেছে তারা। দোনেস্ক কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এ যুদ্ধে তাদের ৪৭ থেকে ৭৭ সেনা নিহত হয়েছেন।

অপরদিকে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ বলছে, ৯ হাজারের বেশি সেনা হারিয়েছে রাশিয়া। সেই সঙ্গে ইউক্রেনে মারা গেছেন ১৯ জন অভিবাসী। বাস্তুচ্যুৎ হয়ে বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন দেশটির ১৫ লাখের বেশি মানুষ।

ইউক্রেনের হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ কথা জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, দেশটিতে অত্যাবশ্যক চিকিৎসা সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। সোমবার জাতিসংঘের এ সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ আগ্রাসনের শুরু থেকে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে ১৬টি হামলা হয়েছে।