যোদ্ধাদের কড়া পাহারা, কিয়েভ এখন এক দুর্গ
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মাত্র দুই সপ্তাহ আগেও দৈনন্দিন পণ্যসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় বসেছিলেন দোকানি। স্কুল-কলেজগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে মগ্ন জাতি তৈরির কারিগর। কিংবা দলিল দস্তাবেজ নিয়ে ডেস্কে ব্যস্ত অফিস কর্মচারী। এভাবেই চলছিল কিয়েভবাসীর দৈনন্দিন জীবনযুদ্ধ। কিন্তু রুশ আগ্রাসনের ফলে বদলে গেল সব। গ্লোবাল টাইমস, সিএনএন।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ান বাহিনীর হামলা
এখন এই বেসামরিক লোকগুলোই জন্মভূমিকে রক্ষার শপথে বলীয়ান। অস্ত্রের মহড়া নিয়েই ব্যস্ত শহরের সেই মানুষগুলো। আক্ষরিক অর্থে বদলে যাওয়া জীবনে তাদের জীবনযুদ্ধ রূপ নিয়েছে দেশ বাঁচানোর যুদ্ধে। ইউক্রেনীয় সামরিক শক্তির পাশাপাশি কিয়েভ দুর্গ পাহারায় এখন এই স্বেচ্ছাসেবকরাও।
কিয়েভে শীতের প্রকোপ অনেক। সেই হিমশীতল অবস্থায়ও স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে যথেষ্ট গরম কাপড় নেই। সবুজ কিংবা কালো রঙের প্যান্ট আর কোট যেন তাদের অনানুষ্ঠানিক ইউনিফর্ম। ধরনটা সামরিক নয়, শিকার ধরতে ছদ্মবেশী মোটিফে বেসামরিক প্যাটার্ন। স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের খাপওয়ালা ছুরিতে তার অবয়বে কিছুটা হলেও হিংস্রতা এসেছে। কিয়েভ হামলায় রুশ সেনাদের থামিয়ে দিতে শহরের প্রান্তে প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে বাঙ্কার, চেকপোস্ট।
প্রতিটি চেকপোস্টে চার ঘণ্টা অন্তর অন্তর পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন স্বেচ্ছাসেবকরা। তাদের একজন ওলেক্সি গনচারেঙ্কো। ঠান্ডায় তার ফরসা চেহারায় ভর করেছে লালচে আভা। বললেন, সব ঠিক আছে, তবে ঠান্ডার ধকল একটু বেশি। এ থেকে কিছুটা রেহাই পেতে স্থানীয়রা আমাদের গরম স্যুপ বা চা-কফি দিচ্ছেন।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফের মতে, আক্রমণ শুরু হওয়ার প্রথম দুদিনে প্রায় ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ফোর্সে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের মধ্য থেকে শুধু কিয়েভ রক্ষায় কর্তৃপক্ষের ডাকে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। যারা এই বাহিনীতে যোগ দিতে পারেননি, তারা অন্য উপায়ে এই স্বেচ্ছাসেবক কিংবা অন্য সেনাদলকে সাহায্য করছেন। তাদের সবারই লক্ষ্য কিয়েভ রক্ষা।
অস্ত্র হাতে নেওয়ার সুযোগ না-পাওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব নেহায়েত কম নয়। ছদ্মবেশী জাল সেলাই করা, ককটেলসহ বিস্ফোরক তৈরি করা তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। কেউ কেউ আবার দাঁড়িয়ে থাকা পাহারাদারদের জন্য খাবার গরম পানীয় এবং অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করে হাতে তুলে দিচ্ছেন, সামরিক বাহিনীর দৈনন্দিন ব্যয় সঙ্কুলানে সরকারের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনুদান সংগ্রহ করছেন, হানাদার বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে তারা রাস্তায় ব্লক তৈরি করছেন, এমনকি ট্রাফিক সাইনগুলোর ওপর রং মেরে দিচ্ছেন।
কিয়েভের কেন্দ্রে একটি বইয়ের দোকান এখন স্বেচ্ছাসেবক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর মালিক ওলেক্সি এরিনচাক বলেন, আমরা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। আমরা যদি তা মোকাবেলা করতে না পারি, তবে আমরা রাশিয়ানদের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হব, আমাদের সব সরবরাহ নেটওয়ার্ক ধ্বংস হয়ে যাবে।
স্বেচ্ছাসেবকরা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে কাজ করে যাচ্ছেন। আর তা হলো, প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগের বিকল্প নেটওয়ার্ক তৈরি করা। তিনি বলেন, ‘ধরুন, কোনো ইন্টারনেট সংযোগ নেই, ফোন সংযোগ করা যাচ্ছে না, তখন জরুরি প্রয়োজনে আপনি খাবার, পানীয় কিংবা ওষুধের প্রয়োজনীয়তা মেটাবেন কীভাবে? এই অভাব পূরণ করতেই আমরা তৈরি করছি এই বিকল্প নেটওয়ার্ক। আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনেক শক্তিশালী। পর্যাপ্ত নেটওয়ার্কের অভাবে সেটা ভেঙে পড়ুক তা আমরা চাই না।
কিয়েভ রক্ষায় সেনারা: কিয়েভ শহর রক্ষায় অগণিত চেকপোস্টের সঠিক সংখ্যা কৌশলগত কারণে গোপন রাখা হয়েছে। তবে প্রতিটি চেকপোস্টেই অবস্থান নিয়েছে সামরিক বাহিনীর আলাদা আলাদা ট্রুপ।
কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমে হোস্টোমেলের কাছাকাছি কৌশলগত চৌরাস্তায় একটি ব্লকিং পজিশন শক্তিশালী করছিলেন দলের কমান্ডার জনি ড্রাগন। প্রচণ্ড শীতে শরীর অবশ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও অবলিলায় কাজ করে যাচ্ছেন তার অধীনস্থ সেনারা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.