কমল ভোজ্যতেলের দাম

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে সরকারের রাজস্ব বিভাগ তথা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর সয়াবিন ও পাম তেলের ওপর থেকে মোট ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। আজ সোমবার, ১৪ মার্চ প্রজ্ঞাপন জারি করে ভ্যাট প্রত্যাহারের তথ্য জানিয়েছে এনবিআর। এর ফলে বাজারে অতিপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম খুব বেশি না হলেও খানিকটা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

কমল ভোজ্যতেলের দাম, ফাইল ছবি

প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, সয়াবিন ও পাম তেলের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ মিলে মোট ২০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। চলমান ঊর্ধ্বমুখী বাজার নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে সেই ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলো। এই সিদ্ধান্ত চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে, অর্থাৎ আগামী জুন পর্যন্ত ভোজ্যতেলে এই ভ্যাট দিতে হবে না।

অবশ্য আমদানি পর্যায়ে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট অপরিবর্তিত থাকছে। যদিও আজ সোমবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, রান্নার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তেলের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ যে ভ্যাট রয়েছে, তা কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, সরবরাহ কম এবং সবশেষ ইউক্রেন যুদ্ধে দোহাই দিয়ে আবারো নিত্যপণ্যটির দামি বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা।

বাজারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৭৯৫ টাকা। কিন্তু সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া দামও মানা হচ্ছে না। সরবরাহে ঘাটতির অজুহাত দেখিয়ে আজ সোমবারও রাজধানী ঢাকার খুচরা পর্যায়ে ৫ লিটারের বোতল ৮২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়।

দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, মিল থেকে তেলের সরবরাহ কমে গেছে। একই এক শ্রেণির ব্যবসায়ী তেল মজুদ করায় এই সংকট আরো প্রকট হয়েছে এবং বেড়েছে পণ্যটির দাম। ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছে সরকার ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে, সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ভোজ্যতেলে ২০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করায় পণ্যটির দামে বেশ খানিকটা প্রভাব পড়বে। এতে আসন্ন রমজান মাসে মানুষ তেলের দাম নিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকবেন।

এর আগে গত ১০ মার্চ ভোজ্যতেলের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় সরকার। ওই দিন সয়াবিন তেল আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম সিটি গ্রুপের বিপণন বিভাগের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা ধারণা দেন যে, সরকার ভ্যাট প্রত্যাহারের যে ঘোষণা দিয়েছে, তাতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৩০ টাকার মত কমতে পারে।

এখন সরকারের ভ্যাট প্রত্যাহারের পরও বাজারে সয়াবিন বা ভোজ্যতেলের দাম কমে কি না- সেটাই দেখার বিষয়। কারণ যথাযথ তদারকির অভাবে সরকারের সিদ্ধান্তের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় না। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জোর তদারক করার কথা জানানো হয়েছে এবার।