ইউক্রেনের বন্দরে খালাস হচ্ছে ট্যাঙ্ক-সাঁজোয়া যান!

ইউক্রেনের বারদিয়ানস্ক বন্দরে নিজেদের সমরাস্ত্র খালাসের কাজ শুরু করেছে রাশিয়া। রুশ নৌবাহিনীর ব্ল্যাক সি ফ্লিটের পাহারায় সোমবার বারদিয়ানস্ক বন্দরে প্রবেশ করে ডক ল্যান্ডিং শিপ ব্রিগেড ওরস্ক। পরে ওইসব জাহাজ থেকে বেশকিছু ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও ভারী গোলাবারুদ খালাস করে রুশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের জন্য পাঠানো হয়।

বারদিয়ানস্ক বন্দর, ফাইল ছবি

খালাসকৃত সমরাস্ত্রের মধ্যে বিটিআর ৮০এ সাঁজোয়া যান থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, অবরুদ্ধ ইউক্রেনীয় শহরগুলোতে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ বাহিনী।

ইউক্রেনের বৈদেশিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বারদিয়ানস্ক বন্দরের। ইউক্রেন থেকে রপ্তানিকৃত কয়লা, শস্য, আকরিক লোহা, সূর্যমুখী তেল ও অন্যান্য পণ্যের চালানের বড় অংশ যায় এই বন্দর হয়ে। সামরিক অভিযান শুরুর প্রথম সপ্তাহেই বন্দর ও সংলগ্ন শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয় রুশ বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হলেও এর প্রবেশমুখে অবস্থিত কার্শ প্রণালীর গভীরতা কম থাকায় সবসময় বড় জাহাজ বারদিয়ানস্কে ভিড়তে পারে না।

বারদিয়ানস্ক শহর রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পার্শ্ববর্তী মারিওপলে দুই পক্ষের তুমুল লড়াই চলছে। রুশ বাহিনী শহরটিতে ভারী গোলাবর্ষণ করছে কয়েকদিন ধরে। সবশেষ রোববার মারিওপলে ইউক্রেনীয় পক্ষকে আত্মসমর্পণের সময় বেঁধে দেয় রুশ সৈন্যরা।

আজ সোমবার ভোর ৫টার মধ্যে আত্মসমর্পণের সময় বেঁধে দিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বলা হয়, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করলেই মারিওপল ছাড়ার সুযোগ করে দেয়া হবে। ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক রাশিয়ার আলটিমেটাম প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আত্মসমর্পণ আমাদের পরিকল্পনায় নেই।

মারিওপলে আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেয়ার অব্যবহিত পরেই রুশ নৌবাহিনীর ১১৭তম ডক ল্যান্ডিং শিপ ব্রিগেড বারদিয়ানস্ক বন্দরে নোঙ্গর করে। সোমবার ল্যান্ডিং শিপ ওরস্ক থেকে খালাসকৃত মালামালের মধ্যে ছিল বেশকিছু বিটিআর ৮০এ সাঁজোয়া যান, যার কামান কম উচ্চতার লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণের জন্য বিশেষ উপযোগী। শহরাঞ্চলে যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে তৈরিকৃত বিটিআর ৮০এ সাঁজোয়া যানগুলো বারদিয়ানস্কে নেয়ায় ধারণা করা যায়, এতদিন ধরে অবরোধ করে রাখা ইউক্রেনীয় শহরগুলোতে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ বাহিনী।

এদিকে, বারদিয়ানস্ক বন্দর থেকে শস্যবোঝাই পাঁচটি জাহাজ চুরির অভিযোগ করেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। জাপরোঝঝিয়া ওব্লাস্তের গভর্নর ওলেক্সান্দার স্তারুখ বলেছেন, কয়েক লাখ টন শস্যবোঝাই পাঁচটি জাহাজ বারদিয়ানস্ক বন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রুশ নৌবাহিনীর টাগবোট এসব জাহাজকে টেনে নিয়ে গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে তিনি জানান।