মিয়ানমারে সাজাভোগ শেষে ফিরলেন ৪১ বাংলাদেশি

গত ২০২১ সালের ৬ থেকে ৪১ জন বাংলাদেশি নাগরিক মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে সাজাভোগ করছিলেন। এরপর থেকে তারা মিয়ানমারে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন।

মিয়ানমারের কারাগারে সাজাভোগ করা ৪১ জন বাংলাদেশির দেশে প্রত্যাবর্তন

বিষয়টি জানতে পারার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং মিয়ানমারের সিতওয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলেট দীর্ঘ এক বছর অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে তাদেরকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার ২৩ মার্চ সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে Maungdaw POE (Point of Entry/Exit) নামক স্থানে বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক এবং মিয়ানমার বিজিপির নম্বর (১) বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চ, পিইন ফিউ  এর মধ্যে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ৪১ জন আটক বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

পতাকা বৈঠকে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট  কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এবং বিজিপি’র ৯ (নয়) সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পুলিশে লেফটেন্যান্ট  কর্নেল কাও না ইয়াং শো, অধিনায়ক, নম্বর (১) বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চ, পিইন ফিউ, মিয়ানমার।

পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এছাড়াও উভয় দেশের পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, উত্তরোত্তর উন্নতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের প্রতিনিধি দল মতামত ব্যক্ত করেন।

বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এসব কথা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বাংলাদেশি নাগরিকগণ বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গমনের অপরাধে বিজিপি কর্তৃক ধৃত হয়ে মিয়ানমারের কারাগারে সাজাভোগ করে আসছিল। এ ধরনের সাজাভোগকৃত ৪১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আজকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত আনা হয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্নকরণের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট এর দীর্ঘ এক বছর প্রচেষ্টা চালায়। এর ফলে মিয়ানমারের কারাগার হতে মুক্তিপ্রাপ্ত ৪১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মিয়ানমার থেকে  ফেরত আনা ৪১ জন বাংলাদেশি নাগরিক পুলিশের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা স্বাস্থ্যা কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পতাকা বৈঠক ও বাংলাদেশি ৪১ জন নাগরিক হস্তান্তর ও গ্রহণ শেষে পারস্পরিক বিদায়ী শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের মাধ্যমে অত্যন্ত শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পতাকা বৈঠকের পরিসমাপ্তি ঘটে।