শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছে ভারতও!

অদূরদর্শী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জেরে শ্রীলঙ্কা আজ প্রায় দেউলিয়া। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি আকাশছোঁয়া। তেল নেই, বিদ্যুৎ নেই- সব কিছুতেই নেই আর নেই। বিক্ষোভের জেরে মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভারতের কিছু কিছু রাজ্যে এরইমধ্যে শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা দেখা দিয়েছে। রাজ্যগুলো অবশ্য নিজেদের ঘাড়ে দোষ না নিয়ে কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে সাবধান করছে।

ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটের মুখে

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা আশঙ্কা করছেন, পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে ‘জনসাধারণের মন জেতানো প্রকল্পে’ প্রচুর অর্থ খরচ করা হয়েছে। যেগুলো বাজেটে অনেক বেশি চাপ সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, কয়েকটি রাজ্য সরকার অন্য কিছুর দিকে খেয়াল না করে জনগণের মন জিততে যেভাবে খরচ করছে, তাতে পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে।

দেশটির সচিবরা এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব, দিল্লি, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের নাম উল্লেখ করে রাজ্যগুলোর আর্থিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, এসব রাজ্যে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের জন্য বিনাখরচে বা স্বল্প খরচে বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর সেগুলো পূরণ করতে গিয়ে চাপ পড়ছে রাজ্যের বাজেটে। ফলে বর্তমানে শ্রীলঙ্কার যে অবস্থা, অচিরেই এসব রাজ্যের অবস্থাও তা-ই হতে পারে।

করোনার বড় প্রভাব পড়েছে ভারতের অর্থনীতিতে

তবে এসব সমালোচনাকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করতে চাইছে বিভিন্ন রাজ্য। তারা বলছে, অনেক রাজ্যই এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও কেবল বিজেপির সরকারহীন রাজ্যগুলোর কথাই বলা হয়েছে। অথচ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর অবস্থাও একই রকম। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র রাজ্য নিয়ে কথা বলছে অথচ কেন্দ্রের নিজের অবস্থাই খারাপ!

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সূত্র জানায়, তারা বরং কেন্দ্রের তুলনায় ভালো আছে। রাজ্যের ঘাড়ে ঋণের বোঝা থাকলেও তা লাগামের বাইরে চলে যাচ্ছে না। বরং এতটুকু ঘাটতির ব্যাপারে কেন্দ্রেরই সম্মতি রয়েছে।

সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার বিধায়ক রামগোপাল যাদব বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের হাতই বরং এখন খালি। সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো টাকা নেই। এছাড়া খাদ্য অধিদপ্তরের ভর্তুকি বাবদ ৪.২৭ লক্ষ কোটি টাকা দুবছর ধরে বকেয়া পড়ে রয়েছে। সেগুলো পরিশোধের কোনো কথা নেই। মহামারিতে কেন্দ্রের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারেরই এখন দেউলিয়া অবস্থা। ফলে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি জাতীয় স্তরেই হতে পারে।