ইসরায়েলকে এনপিটি স্বাক্ষরে বাধ্য করার আহ্বান ইরানের

বিশ্ব যখন পরমাণু কর্মকাণ্ডের দোহাই দিয়ে ইরানকে স্থবির করে ফেলার চেষ্টা করছে, সে সময় তেহরান উল্টো পরমাণু অস্ত্রধারী ইসরায়েলকে এনপিটি স্বাক্ষরে বাধ্য করার আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের বার্ষিক পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় ইরান। খবর মেহের নিউজ।

জাহরা এরশাদি

পরমাণু অস্ত্র থাকা না থাকা নিয়ে ইসরায়েল কখনোই মুখ খোলেনি। তবে ধারণা করা হয়, ইসরাইলের কাছে প্রায় ৩০০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে যা দিয়ে গোটা বিশ্ব ধ্বংস করে ফেলা সম্ভব। কিন্তু তেল আবিব এখন পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বা এনপিটিতে সই করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদের কারণে এ পর্যন্ত দেশটিকে কোনো ধরনের শাস্তির মুখোমুখিও হতে হয়নি। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এ ধরনের যে কোনো প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে দেশটিকে রক্ষা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে তারা।

এ অবস্থায় ইসরায়েলকে অবিলম্বে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বা এনপিটিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের উপ স্থায়ী প্রতিনিধি জাহরা এরশাদি।

জাতিসংঘের বার্ষিক পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলন

জাতিসংঘের সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে ইসরায়েলের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির ব্যাপারে বিশ্বসমাজের নীরবতার কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ইসরায়েলকে এনপিটি স্বাক্ষরে বাধ্য করতে হবে। পাশাপাশি তাদের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার দিতে তেলআবিবকে বাধ্য করতে হবে।

ইরানের এই সিনিয়র কূটনীতিক বলেন, আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। বিশ্বকে পরমাণু অস্ত্রের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোকেই একটি সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

বিশ্বের বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সংকট এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিপদের কথা উল্লেখ করে জাহরা এরশাদি বলেন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং নতুন প্রযুক্তির প্ল্যাটফর্মে পারমাণবিক অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণের কারণে বিপদের মাত্রা তীব্রতর হচ্ছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যা প্রয়োজন তা হল একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করার কর্মপরিকল্পনায় একমত হওয়ার জন্য পারমাণবিক শক্তিগুলোর রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি এ বিষয়ে পারমাণবিক অস্ত্রের যে কোনো গবেষণা ও উন্নয়ন, পরীক্ষা, উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। পারমাণবিক দেশগুলোকে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণের চেষ্টা বন্ধ করা এবং এ বিষয়ে তাদের নীতি ও মতবাদ সংশোধন করা উচিত।