ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী: সত্যটা জানলে পুতিনকে সমর্থন করবেন না

আপনাদের সত্য জানার অধিকার আছে, বাস্তবতা জানার অধিকার আছে। আর সত্যটা জানলে আপনারা আপনাদের প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সমর্থন করতে পারবেন না। গতকাল মঙ্গলবার ইউক্রেনের যুদ্ধ বিষয়ে রাশিয়ানদের উদ্দেশ্যে এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি এ সময় রুশ ভাষাতেই কথা বলেন।

রুশ নাগরিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন

বরিস বলেন, বুুচাসহ ইউক্রেনের অন্যান্য শহরে রুশ সেনাদের দ্বারা সংঘটিত নৃশংসতা বিশ্বকে আতঙ্কিত করেছে। সেখানে বেসামরিক লোকদের গণহত্যা করা হয়েছে, তাদের হাত বেঁধে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, ছোট শিশুদের সামনে নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে, মৃতদেহগুলোকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, পরে সেগুলো গণকবরে ফেলে দেওয়া হয়েছে বা রাস্তায় পড়ে আছে।

দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার প্রেক্ষিতে গত ৩০ মার্চ রাশিয়া বুচা থেকে তার সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়। এর আগে প্রায় এক মাস শহরটি রুশ সেনাদের দখলে ছিল।

বুচা শহর

বরিস জনসন রুশ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো আপনাদের কাছ থেকে আড়াল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কারণ আপনাদের প্রেসিডেন্ট পুতিন জানেন, আপনারা যদি এগুলো দেখতে পান, তাহলে তার যুদ্ধ সমর্থন করবেন না। তিনি জানেন, এগুলো প্রতিটি রাশিয়ান মায়ের বিশ্বাসের সাথে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা, যিনি সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য তার ছেলেকে গর্বের সাথে বিদায় জানিয়েছিলেন। পুতিন এ-ও জানেন, তারা খোদ রাশিয়ার সম্মানে একটি দাগ। যুদ্ধ চলতে থাকায় এ দাগ প্রতিদিন বড় এবং আরও অমার্জনীয় হয়ে উঠছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরো বলেন, আপনার প্রেসিডেন্ট যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত। কিন্তু আমি বিশ্বাস করতে পারছি না তিনি আপনার নামে অভিনয় করছে, আপনার সমর্থন পেয়েই তিনি এ কাজ করছেন।

ইউক্রেন বুচায় গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করে আন্তর্জাতিকভাবে তার বিচার দাবি করেছে। তবে রাশিয়া এই অভিযোগগুলোকে ভুয়া দাবি করে বলেছে, রাশিয়ান বাহিনী শহর থেকে প্রত্যাহারের পরই ইউক্রেনে সব কিছু সাজিয়ে এ অভিযোগ তৈরি করেছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিন ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন। এ হামলায় ইউক্রেনে কমপক্ষে এক হাজার ৪৮০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে দুই হাজার ১৯৫ জন। জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী, প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, এ পর্যন্ত ৪২ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় অন্যান্য দেশে পালিয়ে গেছে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭০ লাখের বেশি মানুষ।

ইউক্রেনে এ হামলার প্রেক্ষিতেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া।