রোজার মধ্যে হিন্দু পার্বণ: দিল্লিতে মাংস বিক্রি বন্ধ নিয়ে বিতর্ক

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে নবরাত্রি তথা হিন্দু পার্বণে ৯ দিনের জন্য সব ধরনের মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মুসলমানদের পবিত্র রমজানের মধ্যেই গত ২ দিন ধরে শহরটির বহু দোকানে মাংস বিক্রি বন্ধ রাখা নিয়ে বিতর্কের ঝড় বইছে দেশটিতে। এ ধরনের সিদ্ধান্তে ভারতের বহুত্ববাদ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

দিল্লিতে মাংসের দোকান, ফাইল ছবি

বিবিসি বাংলা জানায়, হিন্দু ধর্মমতে মহিষাসুরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেবী দুর্গার বিজয় উদযাপনকে কেন্দ্র করে ৯ দিন নবরাত্রি পালিত হয়। এই সময়ে অনেকে হিন্দু কোনো ধরনের মাংস খান না, এমনকি পেঁয়াজ-রসুন পর্যন্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।

সেই যুক্তি তুলে ধরে দিল্লির উত্তর ও দক্ষিণের মেয়র বলছেন, নবরাত্রির সময় অনেক হিন্দু নিরামিষভোজী হওয়ায় দোকানে মাংস বিক্রি হতে দেখে অস্বস্তি অনুভব করেন। এমন অভিযোগ আসায় বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এই সময়ে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মাংস বিক্রি বন্ধ নিয়ে প্রতিক্রিয়া

খবরে বলা হয়, এই দুই মেয়র ভারতের কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে কারণে তারা নিজেদের রাজনৈতিক আদর্শ অন্যদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন, যাতে অন্যের মাংস খাওয়ার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়নি। ফলে নগর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনেক হিন্দুসহ প্রচুর মানুষ সামাজিকমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এতে ভারতের দীর্ঘদিনের বহুত্ববাদী চরিত্র নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।

এ নিয়ে একটি টুইট করেছেন ভারতীয় পার্লামেন্ট লোকসভার সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্র। তিনি বলছেন, সংবিধানে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো সময় মাংস খাওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও তা বিক্রি করতে পারবেন।

জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ এক টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন যে, দিল্লির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কি পবিত্র রমজান মাসে মুসলিম প্রধান তার রাজ্যে অমুসলিম ও পর্যটকদের প্রকাশ্যে খাওয়া নিষিদ্ধ করা যাবে?