আপনি পড়ছেন

একই পরিবারে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আধ ডজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। সঙ্গে এমপি, একাধিক স্বায়ত্বশাসিত করপোরেশনের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রধান। বলতে গেলে পুরো শ্রীলঙ্কাই ছিল রাজাপাকসা পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। রাষ্ট্র ও সরকারের নেতৃত্ব, পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, বিপুল জনসমর্থন কী ছিল না। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত, অপরিণামদর্শিতা, রাষ্ট্রের ঘাড়ে বিপূল ঋণের বোঝা- তারপরও টিকে ছিল ক্ষমতা, নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে জোট শরিকদের অশ্রদ্ধা, খামখেয়ালিপনায় মাত্র এক সপ্তাহে উল্টে গেছে পাশার দান। রাজাপাকসা পরিবারের হাতের মুঠো থেকে বেরিয়ে পড়ছে শ্রীলঙ্কা।

sri lanka prime minister mahinda rajapaksa and president gotabaya rajapaksaপ্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসা এবং প্রেসিডেন্ট গোতাবি রাজাপাকসা

কেবল যে ক্ষমতা হাতছাড়া হচ্ছে, তা-ই নয়। প্রায় ছয় দশক ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে নিজেদের সমীহ-জাগানিয়া অবস্থানও হারাতে চলেছে হাম্বানটোটার রাজাপাকসা পরিবার। পরিবারের এক সদস্য, প্রেসিডেন্ট গোতাবি রাজাপাকসার ভাইঝি নিরূপমা রাজাপাকসা এরইমধ্যে স্বামী-সন্তান নিয়ে দেশ ছেড়েছেন।

প্যান্ডোরা পেপারসের তথ্য মতে, সিডনি, টরন্টোতে বাড়ি রয়েছে তার। প্যাসিফিক কমোডিটিজ নামে একটি শেল কোম্পানি নিবন্ধন করেছেন তিনি সামোয়া আইল্যান্ডে। গত মেয়াদে শ্রীলঙ্কার এমপি ও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তার স্বামী থিরুকুমার নাদেসান একটি শেল কোম্পানি ও একটি ট্রাস্ট নিবন্ধন করেছেন চ্যানেল আইল্যান্ডে। এসব কোম্পানি ও ট্রাস্টের মাধ্যমে নাদেসান-নিরূপমা দম্পতির বিনিয়োগ রয়েছে বেশ কয়েকটি জায়গায়, রয়েছে অতি মূল্যবান শিল্পকর্ম সংগ্রহ।

তবে চলতি সপ্তাহে এ দম্পতি কলম্বোর করুণানায়েকে বিমানবন্দর থেকে উড়ে অস্ট্রেলিয়া, কানাডায় নয়, গেছেন আরব আমিরাতে। জনরোষ এড়িয়ে আড়ালে থাকাই হয়তো লক্ষ্য। রাজাপাকসা পরিবারের আরও কয়েকজন যাই যাই করছে বলে জোর গুজব শ্রীলঙ্কায়। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের অনেকটুকু দায় সরকারবিরোধী রাজনীতিকরা যাকে দিচ্ছেন তিনি হলেন বিদায়ী অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসা। মার্কিন পাসপোর্টধারী বাসিল প্রকাশ্যে নেই গত তিনদিন ধরে।

শ্রীলঙ্কার সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, নিরূপমা-নাদেসান অথবা বাসিল শুধু নয়, দেশের বাইরে মাল্টিবিলিয়ন ডলারের সম্পদ পুঞ্জিভূত করেছেন রাজাপাকসা পরিবারের সব সদস্য। দুবাই, সেশিলেজ ও সেন্ট মার্টিনের ব্যাংকগুলোতে বিপুল অর্থ গচ্ছিত রেখেছেন তারা। প্রতারণা, দুর্নীতি ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ রয়েছে এ পরিবারের অন্তত আট সদস্যের বিরুদ্ধে। শ্রীলঙ্কা যখন ডুবছে, আপাতত তাদের কেউ কেউ হয়তো দেশের বাইরে পাড়ি জমাবেন। কিন্তু দেশ ছেড়ে গিয়েও রাজাপাকসা পরিবারের শান্তি কই? বহু আগেই সুদূর লস এঞ্জেলেসে বসতি গড়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবি রাজাপাকসার ছেলে মনোজ। বিক্ষোভ চলছে সেখানে তার বাড়ির সামনেও।

শ্রীলঙ্কার মানুষ বিক্ষোভ করছে। দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্ত তো বটেই, বিদেশে শ্রীলঙ্কার মিশনগুলোর সামনেও বিক্ষোভ করছে তারা। এছাড়া আর কিইবা করতে পারে মানুষ। ঘরে খাদ্য নেই, হাসপাতালে ওষুধ নেই, জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দরকারি রাসায়নিক নেই, পেট্রেল পাম্পে জ্বালানি নেই, দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নেই। পকেটে কারো কারো অর্থ থাকলেও সেটার মান কমছে হু হু করে। ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কার রুপির মান ২০০ থেকে নেমে একদিনে হয়েছে ২৮৫ রুপি। তীব্র দাবদাহে বিদ্যুৎ নেই। সমাধানের কোনো লক্ষণ নেই। সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, কারো কাছ থেকে কিছুর আশ্বাস নেই। এমন তীব্র আশাহীনতায় সামষ্টিক হতাশা প্রকাশে মামুলি প্রতিবাদটুকুই তো ভরসা। এজন্য এমনকি মক্কায় গিয়েও তারা প্রতিবাদী বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরছেন।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক পরিবারের বংশানুক্রমিকভাবে ক্ষমতায় ও নেতৃত্বে থাকার দৃষ্টান্ত রয়েছে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাটের অভিযোগও আছে এমন কয়েকটি পরিবারের বিরুদ্ধে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসাদের মতো এতো আত্মবিশ্বাস নিয়ে স্বজনপ্রীতির নজির হয়তো নেই। ২০১০-১৫ সময়কালে মহিন্দা রাজাপাকসা দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে মন্ত্রীসভায় ছিলেন তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য। এর বাইরেও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন রাজাপাকসা পরিবারের ৪০ জনের বেশি সদস্য।

ব্যতিক্রম নয় এবারও। গোতাবি রাজাপাকসা প্রেসিডেন্ট, তার বড় ভাই মহিন্দা প্রধানমন্ত্রী, ছোট ভাই চমল রাজাপাকসা বন্দর বেসামরিক বিমান চলাচল, সেচ ও পানিসম্পদ মন্ত্রী, আরেক ভাই বাসিল অর্থমন্ত্রী, মহিন্দার ছেলে নমল যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন, প্রযুক্তি উদ্ভাবন বিষয়ক মন্ত্রী, চমলের ছেলে শশীন্দ্র ধান ও খাদ্যশস্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। তৃতীয় প্রজন্মের রাজাপাকসাদের মধ্যে নমল, শশীন্দ্র ছাড়াও এমপি পদে ছিলেন গোতাবির ভাইঝি নিরূপমা, ভাগ্নে নিপূণ।

২০২০ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৪৫ আসনের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় রাজাপাকসাদের এসএলপিপির নেতৃত্বাধীন জোট। বিরোধী ক্যাম্প থেকে দলছুট কিছু এমপিকে পাশে পেয়ে ১৫০ সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছুঁয়ে ফেলে এই জোট। একমাস আগে দুই মন্ত্রী বিমল বীরবংশ ও উদয় গমনপিলাকে বরখাস্ত করলে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় ক্ষমতাসীন জোট। দুই জোটসঙ্গীকে গোতাবি রাজাপাকসা মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে দেন কারণ এরা তার ভাই অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসার সমালোচনা করেছিলেন। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় বাসিল যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন দুই মন্ত্রী। এর জেরে ওই দুজনকে মন্ত্রীসভা থেকে বাদ দেন গোতাবি। এরপর থেকে শুরু। ক্ষমতাসীন দল ও জোটের ভেতরে নানারকম টানাপড়েন স্পষ্ট হতে থাকে। জোটের ছোট সঙ্গীদের পাশাপাশি দলের ভেতরেও এমপিরা সরকারের পাশ থেকে সরতে থাকেন।

মঙ্গলবার ৪১ জন এমপি সমর্থন প্রত্যাহার করায় প্রেসিডেন্ট গোতাবি রাজাপাকসা মঙ্গলবার পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। তারপরও তিনি কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন পার্লামেন্টে তার শ্রীলঙ্কা পিপলস পার্টি (এসএলপিপি) দলের চিফ হুইপ জনস্টন ফার্নান্দো। প্রেসিডেন্ট গোতাবি ও তার ভাই মহিন্দা বিরোধী দলগুলোকে সরকারে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা এ মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করলেও স্পষ্ট বলেছেন, শ্রীলঙ্কার মানুষ এখন রাজাপাকসা নামের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছুকে আর সহ্য করতে চায় না। এ অবস্থায় সরকারে যোগ দেওয়ার প্রশ্ন আসে না।

গোতাবি ও মহিন্দা রাজাপাকসার বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার। তাদের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো রাজনৈতিক প্রস্থান ঘটতে চলেছে রাজাপাকসা পরিবারের। শ্রীলঙ্কা যে অর্থনৈতিক খাদে পড়েছে তাতে রাজাপাকসাদের মূল রাজনৈতিক পুঁজি আবেদন হারিয়েছে বলে কেউ কেউ মন্তব্য করছেন। তাদের মতে, বিভাজনের রাজনীতি দিয়ে যে পরিবারের উত্থান, তারা এখন দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের মুখে বিদায় নিতে বাধ্য হচ্ছে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় হাম্বানটোটা জেলায় বিপুল পরিমাণ ভূমির মালিক রাজাপাকসা পরিবার। গোতাবি, মহিন্দাদের দাদা ডন ডেভিড রাজাপাকসা প্রভাবশালী সামন্ত হিসেবে ব্রিটেশ আমলে পরিচিতি পান। তার ছেলে, গোতাবিদের চাচা ডন ম্যাথিউ সেকালের সিলন কাউন্সিলে হাম্বানটোটার প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পর প্রতিনিধি নির্বাচিত হন তারই ছোট ভাই এবং গোতাবি, মহিন্দা, চমল ও বাসিলের বাবা ডন আলউইন রাজাপাকসা। এরইমধ্যে সিলন স্বাধীন হয়ে শ্রীলঙ্কা নাম নেয়। ডন আলউইন হাম্বানটোটা থেকে এমপি নির্বাচিত হন। কৃষি ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নিযুক্ত হন তিনি। ভূমি মালিকানায় তামিলদের বিপরীতে সিংহলিজদের বৈষম্যমূলক সুবিধা দেওয়ার অন্যতম স্থপতি বলা হয় তাকে।

ডন ম্যাথিউ ও ডন আলউইনের আমল থেকে রাজাপাকসারা হাম্বানটোটায় প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলেও শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সেনানায়েকে ও বন্দরনায়েকে পরিবারের আধিপত্যের মুখে তারা ছিল জুনিয়র পার্টনার। বরাবরই বন্দরনায়েকে পরিবারকে সমর্থন দিয়ে গেছে তারা। শ্রীমাভোর আমলে মন্ত্রী ছিলেন ডন আলউইন, তার মেয়ে চন্দ্রিকার আমলে মন্ত্রী হন মহিন্দা। পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে চলতি শতকের শুরুতে। ২০০৪ সালের নির্বাচনে ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স টেনেটুনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে প্রধানমন্ত্রী হবার সুযোগ পান মহিন্দা রাজাপাকসা। পরের বছরই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সামান্য ভোটারদের ব্যবধানে জয়ী হন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, তামিল সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোয় ভোটাররা কেন্দ্রে না আসায় মহিন্দা প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন। নির্বাচনে জিতেই প্রতিরক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় নিজের হাতে রাখার পাশাপাশি বিদায়ী সেনাপ্রধান শরথ ফনসেকাকে নতুন মেয়াদে নিয়োগ দেন। অল্পদিনের মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে নিজের ছোট ভাই গোতাবি রাজাপাকসাকে নিয়োগ দেন তিনি।

পরবর্তী সাড়ে তিন বছরে তীব্র রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে শ্রীলঙ্কার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিলদের সম্পূর্ণ নির্মূল করে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী। এরই মাধ্যমে সংহত হয় সংখ্যাগুরু সিংহলিদের মাঝে রাজাপাকসা পরিবারের জনসমর্থন। তখন থেকে বাড়তে থাকে রাজাপাকসা পরিবারের প্রভাব। পরপর দুই মেয়াদে (২০০৫-২০১৫) প্রেসিডেন্ট পদে ক্ষমতাসীন থাকেন মহিন্দা রাজাপাকসা। এরপর তিন বছরের কিছু বেশি সময় বিরোধী দলে থাকলেও ২০১৯ সালে আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে এই পরিবার। এবার নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়ে ছোট ভাইকে প্রেসিডেন্ট পদে বসান মহিন্দা রাজাপাকসা।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, ২০১৯ সালে রাজাপাকসা পরিবার শ্রীলঙ্কার ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে, প্রার্থনার স্থলে হামলার কয়েকটি ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, তামিলদের অনুপস্থিতিতে সংখ্যাগুরু সিংহলিদের ভোট সংহত রাখতে মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাড় করানোর চেষ্টা চলে। যদিও এসব অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি। সত্যমিথ্যা যা-ই হোক, এবার বোধ হয় শেষরক্ষা হচ্ছে না। অর্থনৈতিক সংকটের তীব্রতার সামনে রাজাপাকসাদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার কোনো যুক্তি মিলছে না।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.