ন্যাটোকে শক্তিশালী করতে এবং জাতীয় স্বার্থে তুরস্ককে এফ-১৬ দেবে যুক্তরাষ্ট্র
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর তুরস্ককে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ন্যাটর ঐক্যকে শক্তিশালী করতে এবং মার্কিন স্বার্থ রক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে কংগ্রেসে জানানো হয়েছে। গত বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় আনাদোলু।
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান
আইন প্রণয়ন বিষয়ক স্টেট ডিপার্টমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তা নাজ দুরাকোগলু লিখিত কংগ্রেসের ওই চিঠিতে বলা হয়, প্রশাসন বিশ্বাস করে, দীর্ঘমেয়াদি ন্যাটো জোটের ঐক্য এবং সক্ষমতার স্বার্থের পাশাপাশি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থে এসব সরঞ্জাম বিক্রি করা হচ্ছে। চিঠিটি লেখা হয় কংগ্রেসম্যান ফ্রাঙ্ক প্যালোনকে, যিনি একই সাথে হাউস এনার্জি অ্যান্ড কমার্স কমিটির সভাপতিত্ব করেন। চিঠিতে আরো বলা হয়, যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি অনুমোদন করে, তাহলে প্রস্তাবিত বিক্রয়ের জন্য একটি কংগ্রেসের বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন হবে।
এ ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার ন্যাটো মিত্র তুরস্কের সাথে তার অংশীদারিত্বকে দৃঢ়ভাবে মূল্য দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্ক প্রতিরক্ষা সম্পর্ক অনেক পুরোনো
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে একশটির বেশি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনতে চেয়েছিল তুরস্ক। সে হিসেবে তারা অর্থও পরিশোধ করে। কিন্তু রাশিয়া থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্তে তুরস্কের ওপরে ক্ষুব্ধ হয় যুক্তরাষ্ট্র। তখন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছিল, রাশিয়া থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করলে তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়া হবে না।
পরে তুরস্ক ঠিকই রাশিয়ার সেই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করে। সে সময় তারা যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিমান অথবা অর্থ ফেরত দেওয়ার দাবি জানায়। সেটি নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা চলার পর তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এফ-৩৫ এর বিনিময়ে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়ার দাবি জানায়।
এ বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোয়ান বলেন, আমরা এফ-৩৫ এর জন্য ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন যুক্তরাষ্ট্র এর বিনিময়ে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিতে চাইছে। পরে সেটি নিয়েই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। এক্ষেত্রে তুরস্ক ৪০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এবং ৮০টি মডার্নাইজেশন কিট কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে।
মূলত তুরস্কের বিমানবহর পুরোটাই মার্কিন যুদ্ধবিমান দিয়ে সাজানো। এগুলোর মধ্যে আছে- এফ-৪ ও এফ-১৬। ১৯৭৪ সালে এফ-৪ যুদ্ধবিমান ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু করে তুরস্ক এবং ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ২০ বছর সময়কালে শতাধিক এফ-৪ যুদ্ধবিমান পায় তুরস্ক। এর বেশিরভাগই এখন অবসরে চলে গেছে। আর বাকিগুলোকে কিছুটা মেরামত করে ২০৩০ সাল অবধি সার্ভিস নিতে চায় তুরস্ক। সেজন্যই ৮০টি কিট চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।
অন্যদিকে তুরস্কের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৩ সালে। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ১৬০টি বিমান কেনার চুক্তি হয়। এর মধ্যে আটটি যুক্তরাষ্ট্রে এবং ১৫২টি তুরস্কে উৎপাদনের শর্ত থাকে চুক্তিতে। তুরস্কের এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথভাবে তুরস্কে এ বিমানগুলো উৎপাদন শুরু করে।
প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যন্ত্রাংশ নিয়ে এসে তুরস্কে কেবল অ্যাসেম্বেলিং করা হতো। পরে অবশ্য লাইসেন্স নিয়ে তুরস্কেই পুরোপুরি বিমান তৈরি হতে থাকে। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে বিভিন্ন মডেলের ২৩২টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তৈরি করে তুরস্ক। এভাবে তুরস্কের বিমানবহর সজ্জিত হয় এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে। তুরস্কের বিমানবাহিনীকে সর্বশেষ এফ-১৬ বিমান সরবরাহ করা হয় ২০১২ সালে।
ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক ঘোষণামতে দীর্ঘ ১০ বছর পর আবারো যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিমান পেতে চলেছে তুরস্ক।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.