সংকট চরমে, তবু পদ ছাড়বেন না শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট

দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। এক সঙ্গে পুরো ক্যাবিনেট পদত্যাগ করেছে। নতুন করে মন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার পর তাদের মধ্যেও পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে, চেয়ার ছেড়ে গেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। ৪২ জন এমপি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন। তারপরও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ৬৯ লাখ ভোটারের ভোটে। খবর রয়টার্স।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে শ্রীলঙ্কা আর কখনো এত বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়নি। অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক মুদ্রার মজুত সংকটে পড়ে দ্বীপরাষ্ট্রে এখন কেবল নেই আর নেই অবস্থা। খাদ্য, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবগুলো খাতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

বিষয়গুলো নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন সাধারণ শ্রীলঙ্কানরা। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেছেন চিকিৎসকেরা। স্কুলে পরীক্ষা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

অর্থনৈতিক সংকটে মূল্যস্ফীতি আকাশ ছুঁয়েছে। এক কেজি চাল ৫০০ টাকা, এক কেজি দুধ ১৭০০ টাকা, এক কাপ চা ১০০ টাকা- এমনই দাম চলছে সেখানে। তারওপর বিদ্যুৎ ঘাটতি, তেলের অভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত। সবাই তাই নেমেছেন বিক্ষোভে।

বিক্ষোভ ঠেকাতে দেওয়া হয়েছিল কারফিউ। সেটা ভঙ্গ করে বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া পুরো ক্যাবিনেটই পদত্যাগ করেছে। নতুন যে কয়েকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যেও অর্থমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। পদ ছেড়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও। মোটকথা, আর্থিক বিষয়ের ধারে কাছে থাকতে চাইছেন না কেউ।

জনগণ এখন প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চাইছে, যারা সহোদর দুই ভাই। কিন্তু তারা এ পরিস্থিতিতে পদত্যাগের কথা মুখেও আনছেন না। লঙ্কান সরকারের সড়কমন্ত্রী জনস্টন ফার্নান্দো উল্টো বিক্ষোভকারীদের একহাত নিয়েছেন।

তিনি বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে বলেছেন, আপনাদের কি আবার স্মরণ করিয়ে দেব, ৬৯ লক্ষ মানুষ প্রেসিডেন্টকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। সরকার হিসেবে আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছি, কোনো পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করবেন না। ২০১৯ সাল থেকে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে চলমান বিক্ষোভ ঠেকাতে গত সপ্তাহে গোতাবায়া সরকার যে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল, গত মঙ্গলবার সেটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। একই দিন ৪২ জন এমপিও সরকারি জোট ছেড়ে গেছে। ফলে সরকার সরকার পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।