নিষেধাজ্ঞায় হঠাৎ আলোচনায় পুতিনের দুই মেয়ে, মিডিয়ায় পরিবারের খবর

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুই মেয়ে। এরপরই হঠাৎ করে পুতিনের পারিবারিক জীবন ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমে বিস্তারিত খবর প্রকাশ করা হয়েছে। পুতিন বরাবরই তার পরিবার নিয়ে গোপনীয়তা বজায় রেখে চলেন।

পুতিন, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে, ফাইল ছবি

বিবিসি জানায়, ২০১৫ সালের এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়েদের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন পুতিন। তিনি জানান, তার মেয়েরা রাশিয়ায় পড়ালেখা করেছে এবং এখানেই বসবাস করছে। তারা ৩টি বিদেশি ভাষায় কথা বলতে পারে, তাদের নিয়ে তিনি গর্বিত।

পরিবার নিয়ে কখনো কারো সঙ্গে আলোচনা করেন না উল্লেখ করে ওই সময় পুতিন আরো বলেন, প্রত্যেকের নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী ভাগ্য গড়ার অধিকার আছে। তার মেয়েরাও সম্মানজনকভাবে নিজেদের জীবনযাপন করছে। মেয়েদের নাম-পরিচয়সহ আর কিছুই বলতে রাজি হননি তিনি।

কাতেরিনা তিখোনোভা, ফাইল ছবি

তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ নিষেধাজ্ঞায় পুতিনের দুই মেয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যথাক্রমে- মারিয়া ভোরোনৎসোভা, ৩৬ ও কাতেরিনা তিখোনোভাকেও, ৩৫। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা এই রুশ নেতা তার অনেক সম্পদ পরিবারের সদস্যদের কাছে লুকিয়ে রেখেছেন এবং সে জন্য তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার কথা জানায় মার্কিন কর্মকর্তারা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবালা লুডমিলার সঙ্গে কেজিবি কর্মকর্তা পুতিনের বিয়ে হয়েছিল ১৯৮৩ সালে। ২০১৩ সালে বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে তাদের দীর্ঘ ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনের সমাপ্তি ঘটে। এই সময়ে তাদের সংসারে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

দুই মেয়ের সঙ্গে পুতিন

১৯৮৫ সালে পৃথিবীতে আসা বড় মেয়ে মারিয়া ভরোনৎসোভা সেইন্ট পিটারসবুর্গ ইউনিভার্সিটি থেকে জীব বিজ্ঞান এবং মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন। বর্তমানে এনডোক্রাইন ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করা এই নারী মস্কোর এনডোক্রাইন রিসার্চ সেন্টারের তালিকাভুক্ত গবেষক। সেইসঙ্গে শিশুর বৃদ্ধির স্থবিরতা সংক্রান্ত একটি বইয়ের সহ-লেখক এবং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি।

ডাচ ব্যবসায়ী ইয়োরিত ইয়োস্ত ফাসেনকে বিয়ে করা ভরোনৎসোভা বিশাল চিকিৎসা কেন্দ্র গড়তে চলা একটি কোম্পানির মালিকানার অংশীদার। ফাসেন এক সময় রুশ সরকারের জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রমে কর্মরত ছিলেন। তারা সম্ভবত আলাদা থাকেন।

পুতিনের ছোট মেয়ে কাতেরিনা তিখোনোভা একজন রক এন রোল ড্যান্সার। ২০১৪ সালে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তিনি ও তার দল ৫ম স্থান অধিকার করে। ২০০০ সালে পিতার দীর্ঘ দিনের বন্ধুর ছেলে কিরিল শামালভকে বিয়ে করেন তিনি। রুশ জ্বালানি খাতে সম্পৃক্ত থাকায় শামালভের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, তিখোনোভাকে বিয়ের পর শামালভের সম্পদ ‘রাতারাতি বেড়ে যায়’। তবে পরবর্তীতে ওই দম্পতির বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে। তিখোনোভা বর্তমানে শিক্ষাঙ্গন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ২০১৮ সাল ও ২০২১ সালে প্রকাশ্য আলোচনায় অংশ নিতে দেখা যায় তাকে।

বিবিসি জানায়, দুই মেয়ের পুতিনের সঙ্গে খুব একটা দেখা যায় না। ২০১৭ সালে পুতিনের একটি ফোন কলে নাতি-নাতনি থাকার কথা জানা গেলেও তারা সংখ্যায় কতজন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।