ইয়েমেনে আনন্দের জোয়ার, ক্ষমতা ছাড়লেন মনসুর হাদি

দীর্ঘদিনের টানাহেঁচড়ার পর প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মনসুর হাদি। গতকাল বৃহস্পতিবার ক্ষমতা ছাড়ার পাশাপাশি নিজের বিতর্কিত ডেপুটি আলী মোহসেন আল আহমারকেও বরখাস্ত করেছেন। দেশটিতে সাত বছর ধরে চলা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে সৌদি আরবের সমর্থনেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর আলজাজিরা ও বিবিসি।

পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছেন মনসুর হাদি

মনসুর হাদির পদত্যাগের ঘোষণার পর সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনি সরকারকে ৩০০ কোটি ডলার আর্থিক সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে রিয়াদ। একইসঙ্গে তারা ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার তাগিদ দিয়েছে। এতসব ইতিবাচক খবরে ইয়েমেনজুড়ে এখনই ঈদের আমেজ তৈরি হয়েছে। খুশিতে যুদ্ধক্লান্ত লোকজন রাস্তায় নেমে এসেছে।

২০১৬ সালের পর গত শনিবার প্রথমবারের মতো দুই মাসের যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয় ইয়েমেনের যুদ্ধরত পক্ষগুলো। এরপরই ইয়েমেনের তথাকথিত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি ক্ষমতা ছাড়ার এই নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, আমি আমার পূর্ণ ক্ষমতা প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের কাছে হস্তান্তর করছি।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন

মনসুর হাদি যে কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন তাতে একজন চেয়ারম্যান এবং সাতজন ডেপুটি রয়েছেন। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাশাদ আল-আলিমি। সৌদি সমর্থনপুষ্ট রাশাদের সাথে ইয়েমেনের রাজনৈতিক দলগুলোর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ কাউন্সিল এখন আনসারুল্লাহ বাহিনীর সাথে আলোচনায় বসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মনসুর হাদি ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহর ডেপুটি অর্থাৎ ইয়েমেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে প্রতিদ্বন্দ্বীবিহীন এক নির্বাচনে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট হন তিনি।

২০১৪ সালে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার পর রাজধানী সানা থেকে উৎখাত হয় মনসুর হাদির সরকার। তখন তিনি পালিয়ে সৌদি আরবে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই কথিত সরকার পরিচালনা করছিলেন তিনি। তবে এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি ইয়েমেনের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন আনসারুল্লাহ ও ন্যাশনাল সালভেশন সরকার।