মোড়ে মোড়ে বিক্ষোভ, ‘যাও গোতা, বাড়ি যাও’

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার ‘কমিশনবাজ’ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে ৩১ মার্চ থেকে। তবে গদি ছাড়ার দাবি নাকচ করে দিয়েছেন গোতাবায়া। বার্তা দিয়েছেন সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও তিনিই প্রেসিডেন্ট থাকবেন। রাষ্ট্রের সর্বেসর্বা হয়ে নিয়ন্ত্রণ করবেন সেনা-পুলিশ।

শ্রীলংকায় প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থার বদল চান বিরোধীরা

মূল্যবৃদ্ধি আর মুদ্রাস্ফীতির পাকে পড়েছে শ্রীলংকা। রাস্তায় রাস্তায় মানুষ। মোড়ে মোড়ে বিক্ষোভ। পদত্যাগ চাই রাজাপাকসে সরকারের। ‘যাও গোতা, বাড়ি যাও’ ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো দ্বীপদেশ। এএফপি, রয়টার্স, সিএএন। 

শ্রীলংকার শাসনব্যবস্থায় সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতার মালিক প্রেসিডেন্ট। স্বভাবতই সরকার পরিচালনায় মন্ত্রিপরিষদের চেয়ে তার প্রভাবই বেশি। দেশটির এই একপেশে শাসনতন্ত্রে এবার আমূল পরিবর্তন চায় বিরোধী দল সোশ্যালিস্ট ইকুয়ালিটি পার্টি (এসইপি)।

গোতাবায়া

দেশটিতে প্রেসিডেন্ট শাসনব্যাবস্থা পরিবর্তনের দাবি দীর্ঘদিনের। তবে চলমান এ বিক্ষোভে নতুন করে জ্বলে উঠেছে ঝিমিয়ে পড়া এ তুষের আগুন। এসইপি চাওয়া নির্বাহী ক্ষমতা অবিলম্বে বিলুপ্ত করা হোক। একমাত্র এই পথেই আসবে সৈরাচারী ক্ষমতার ইতি। জনগণের মন থেকে উঠে যাবে শঙ্কা। স্বাধীন গণতন্ত্রের অবাধ চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হবে দ্বীপে।

দেশটিতে ১৯৭৮ সালে নির্বাহী ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেন জেআর জয়াবর্ধনে। তখন থেকেই চলছে ক্ষমতার অপব্যবহার। গত সপ্তাহে সেখানে যোগ হয়েছে গোতাবায়ার নাম। মানুষের প্রতিবাদ রুখতে জারি করেছেন কারফিউ। ব্যারাক থেকে রাস্তায় নামিয়েছেন সেনাদের। বিক্ষোভ দমন-প্রতিরোধে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়েছেন সেনাদের।

জনরোষে কারফিউ তুললেও অবস্থার উন্নতি না হলে আবার জারি করতে পারেন জরুরি অবস্থা। রাস্তায় নামতে পারে সৈন্যদল। শুধু তাই নয়, শিল্পকর্মে, রাজনৈতিক দলে এবং নানা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি শুরু করতে পারেন তিনি। হতে পারে গণমাধ্যম সেন্সরিং এবং নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক।

এসইপির দাবি, রাষ্ট্রযন্ত্রে এ অপব্যবহার থেকে নাগরিকদের বাঁচাতে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে ‘প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থা’। গোতাবায়াকে ক্ষমতাচ্যুত করার পাশাপাশি, নির্বাহী ক্ষমতা এবং সরকারের যেসব গণতন্ত্রবিরোধী আইন আছে সেগুলোকে বাতিল ঘোষণা করতে হবে।’ বাতিল করতে হবে অপরিহার্য জনসেবা আইনে সরকারি খাতের কর্মীদের ‘ধর্মঘটকে’ অপরাধ হিসাবে দেখা।

সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করতে হবে জননিরাপত্তা আইন এবং সন্ত্রাস আইন প্রতিরোধ। কারণ, এগুলো পুলিশ আর অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে দিয়ে দিচ্ছে রাষ্ট্রশক্তি। এই পরিবর্তন বিভিন্ন কর্মশ্রেণি, গ্রামাঞ্চল আর যুবসমাজকে অর্থনৈতিক এবং সমাজতান্ত্রিকভাবে মৌলিক পুনর্গঠন করতে সাহায্য করবে।

সরকারে বিরেুদ্ধে ধর্মঘটে নেমেছেন শ্রীলংকার সরকারি ও আধা-সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।