আপত্তি সত্ত্বেও শেহবাজের মনোনয়ন বৈধ, পদত্যাগ করবে পিটিআই

পাকিস্তানে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খান সরকারের পতনের পর দেশটিতে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। আগামীকাল সোমবার, ১১ এপ্রিল পাক সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা হবে।

ফাওয়াদ চৌধুরী

তবে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই বলছে, দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পরও শেহবাজ শরিফের মনোনয়ন বৈধ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে আপত্তি করা হয়েছিল। কিন্তু সে আপত্তি খারিজ করে তাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় আগামীকাল সোমবার দলটির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করবেন।

এদিকে, নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন উপলক্ষে আজ রোববার, ১০ এপ্রিল দুপুর ২টা পর্যন্ত আগ্রহী প্রার্থীদের নাম জমা দেওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে বেলা ৩টা পর্যন্ত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সময় নির্ধারণ করে পাক পার্লামেন্ট। এই সময়ের মধ্যে দুই জন প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

বানিগালায় পিটিআইয়ের বৈঠক

এর মধ্যে রয়েছেন সদ্য ক্ষমতাচ্যুত পিটিআই নেতৃত্বাধীন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়ন দাখিল করেছেন। অপরজন হলেন, পাকিস্তানের ঐক্যবদ্ধ বিরোধীদলীয় প্রার্থী শেহবাজ শরিফ। তিনি পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট। 

সিনিয়র পিটিআই নেতা এবং সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী ঘোষণা করেছেন যে, তার দল আগামীকাল সোমবার জাতীয় পরিষদ থেকে গণপদত্যাগ করবে। এর আগে গতকাল শনিবার দিবাগত গভীর রাতে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিরোধীরা।

ইমরান সরকারের তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা যে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনের জন্য পিএমএল-এন সভাপতি শেহবাজ শরিফের মনোনয়নপত্রের বৈধতা দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত। যার প্রতি পিটিআই আপত্তি তুলেছিল। পরবর্তীতে এনএ (জাতীয় পরিষদ) সচিবালয় আপত্তি প্রত্যাখ্যান করে এবং শেহবাজের মনোনয়ন গ্রহণ করে।

ডন বলছে, ইসলামাবাদে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় পিটিআই নেতা বলেন, ইমরান খানের সাথে বানি গালায় পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় কোর এক্সিকিউটিভ কমিটির (সিইসি) একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে পুরো পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ফাওয়াদ চৌধুরী মিডিয়ায় কথা বলার সময় অন্যান্য পিটিআই নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে সিইসি সুপারিশ করেছে যে, পিটিআইয়ের উচিত জাতীয় পরিষদ শুরু হওয়ার পর পদত্যাগ করা। যদি শেহবাজ শরীফের মনোনয়ন পত্রের বিষয়ে আমাদের আপত্তির কোনো সুরাহা না হয়, তাহলে আমরা আগামীকাল পদত্যাগ করব।

ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, শেহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া একটি মহা অন্যায়। কারণ তিনি যেদিন প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনে লড়বেন, সেই দিনই মানি লন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত হবেন। ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির একটি বিশেষ আদালত (সেন্ট্রাল-১) সোমবার, ১১ এপ্রিল ১৪০০ কোটি রুপির লন্ডারিং মামলায় শেহবাজ ও তার ছেলে হামজাকে অভিযুক্ত করতে পারে।  

পাকিস্তানের জন্য এর চেয়ে অপমানজনক আর কী হতে পারে যে, সেখানে একটি বিদেশি নির্বাচিত এবং বিদেশি আমদানি করা সরকার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং শেহবাজের মতো একজন ব্যক্তিকে এর প্রধান করা হচ্ছে, দুঃখ প্রকাশ করে বলেন ফাওয়াদ।