শ্রীলঙ্কা সংকট: নিজ স্বার্থের বাইরে চিন্তাই করছেন না গোতাবায়া

শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ে নাটক চলছেই। ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো ইচ্ছাই নেই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের। তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টাবেন না সে আলামতও স্পষ্ট। রাজাপাকসে পরিবারের অনুগত দেশটির দুজন বিশিষ্ট আইনজীবীকে সংবিধানে নতুন আইন সংযোজনের পথ খুঁজে বের করতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট। নতুন সরকারে নিজের গদি নিরাপদ রাখতেই এই আগাম আয়োজন গোতাবায়ার। দ্য ডিপলোম্যাট।

ছবিতে গোতাবায়া রাজপাকসা (ডানে)

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আগেই প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের একক ক্ষমতা হাতিয়ে নিচ্ছেন গোতাবায়া। যার অর্থ দাঁড়ায়- নিজের ইচ্ছের চরকায় ঘুরাবেন ভাবী প্রধানমন্ত্রীকে! এককথায় বশে থাকতে বাধ্য।

রাজাপাকসে পরিবারের দুর্নীতি, রিজার্ভ সংকট ও চরম মুদ্রাস্ফীতির জেরে শুধু সরকার পতন আন্দোলনের মধ্যেই গোতাবায়াকে সংবিধান সংশোধনের পরামর্শ দেন বিশিষ্ট আইনজীবীরা। এরপরই প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মাধ্যমে সংবিধান সংযোজনের লিখিত আবেদন জানান গোতাবায়া।

জানা গেছে, সংবিধানে নতুন দুটি আইন সংযোজন করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থার কথা বিবেচনা করেই আইন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত এই সংযোজিত আইনের খসড়া প্রধান বিরোধী দল, সাসগি জন বলভেগয়ার (এসজেবি) প্রধান নেতাকেও পাঠানো হয়েছে।

সংশোধনীর প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে, মন্ত্রিসভা হবে ১৫ সদস্যের। কোনো রাজনৈতিক দল নয়, দক্ষতা অনুসারে দেওয়া হবে মন্ত্রণালয়। সদস্যপদ লাভ করতে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হবে।

পরের অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রথম অনুচ্ছেদের মাধ্যমে বানানো মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হবে এক বছরের জন্য। মেয়াদ শেষে পুনঃনিয়োগও দেওয়া যেতে পারে। বলা হচ্ছে প্রস্তাবটি পাশ হলে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবেন মন্ত্রীরা।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্রীলঙ্কার অর্থনিতিকে সবল রাখার প্রচেষ্টা বিফলে যেতে পারে, যদি সংসদে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল একজোট হয়ে কাজ না করে।

মন্ত্রিসভা পদত্যাগের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারেননি প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে ছাড়া মন্ত্রিসভার সকল সদস্য পদত্যাগ করেছেন গত সপ্তাহে।

প্রস্তাবিত আইনটি নিবন্ধ ৪৪-এর পরে যুক্ত করা হতে পারে বলে জানা গেছে। প্রস্তাবটি পাশ হলে এটি নিবন্ধ ‘৪৪-এ’ হিসাবে সংবিধানে সংযোজন করা হবে।