নিরাপদ নন ইসরায়েলিরা, বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

এক সময় ইহুদী বা ইসরায়েলিদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হতো ইসরায়েল। দেশটি এখন আর আগের মতো নিরাপদ মনে হচ্ছে না এর বাসিন্দাদের কাছে। ক্রমশ যেমন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণ বেড়েছে, তেমনি ব্যক্তি পর্যায়েও হামলার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে অনেক ইসরায়েলি।

বন্দুকধারীদের হামলায় হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ

ইসরায়েলিদের আশঙ্কার অন্যতম কারণ কারণ হচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনীর মোকাবেলায় ফিলিস্তিনিদের প্রতিরক্ষামূলক এবং পাল্টা আক্রমণের হার দিন দিন বাড়ছে। তাদের আশঙ্কা, এর পরিমাণ দিন দিন আরো বেড়ে যাবে।

মধ্যপ্রাচ্যের সমর বিশারদরা বলছেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলিদের দখলদারিত্ব কায়েম হয় মূলত দুটি পন্থায়। একটি হলো সেনা অভিযানের মাধ্যমে, দ্বিতীয়টি বসতি স্থাপনকারীদের মাধ্যমে। এর মোকাবেলায় ফিলিস্তিনিরাও দুই ধরনের ব্যবস্থা অবলম্বন করছে। প্রথমটি হচ্ছে, হামাস বা আলজিহাদের মতো প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মাধ্যমে মোকাবেলা, দ্বিতীয়টি হচ্ছে বেসামরিক লোকদের মাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণ।

গাজায় ইসরায়েলি হামলা

গত কয়েকদিনে ইসরায়েলে দ্বিতীয় পর্যায়ের হামলা অনেক বেড়েছে। তারা ইসরায়েলিদের দখলকৃত বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

গত ২২ মার্চ মোহাম্মদ গালেব আবু কিয়ান নামের সাবেক এক ফিলিস্তিনি বন্দি অধিকৃত আল-কুদসের বিয়ারশেবাতে হামলা চালায়, যাতে চারজন ইসরায়েলি নিহত হয়। ২৭ মার্চ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের আল-খেদিরা শহরে এক ফিলিস্তিনির হামলায় নিহত হয় দুই ইসরায়েলি। দিয়া হামারশেহ নামের এক ফিলিস্তিনি যুবক গত ২৯ মার্চ তেল আবিবের বানি ব্রাক এলাকায় যে হামলা চালান, তাতে পাঁচজন ইহুদি বসতি স্থাপনকারী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরো দুজন।

সর্বশেষ গত ৭ এপ্রিল ২৮ বছর বয়সী রাদ হাজেম তেল আবিবের ডিজেনগফ স্ট্রিটে একটি বারে গুলি চালালে দুই ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ১২ জন আহত হন। পরে ইয়ামাম পুলিশ ইউনিট এবং শিন বেট নিরাপত্তা পরিষেবার অফিসারদের সাথে গুলি বিনিময়ে হাজেম শহিদ হন।

মাত্র ২০ দিনের মধ্যে এতবার এ ধরনের হামলার শিকার হয়ে ইসরায়েলিরা মনে করছেন, রাষ্ট্র তাদেরকে আগের মতো আর নিরাপত্তা দিতে পারছে না। ফিলিস্তিনিদের এ ধরনের হামলার মোকাবেলায় ইসরায়েলি বাহিনীর দুর্বলতা ও ব্যর্থতা তাদের শঙ্কা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

এ অবস্থায় সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কিছু কিছু ইসরায়েলির মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছে। তারা মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরও শরণাপন্ন হচ্ছেন।