ষড়যন্ত্রের অভিযোগকে গুজব বলে উড়িয়ে দিল পাক সেনাবাহিনী

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির সাথে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের মেয়াদবৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে- এমন গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাবেদ বাজওয়া নির্ধারিত সময়েই অবসর নেবেন। তার মেয়াদ বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। খবর এএনআই, এনডিটিভি।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া

গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীকে ঘিরে যেসব প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, তার অনেকগুলোর ব্যাপারেই সেনাবাহিনীর অবস্থান পরিষ্কার করেন।

জেনারেল বাজওয়ার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে গুজবকে অস্বীকার করে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, এ বছরের ২৯ নভেম্বর তার অবসর নেয়ার তারিখ রয়েছে। পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন সেদিনই তিনি অবসর নেবেন।

আইএসপিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার

তিনি বলেন, স্থানীয় রাজনীতির সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই এবং প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যতেও অরাজনৈতিক থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি অরাজনৈতিক শব্দটির ব্যাপারে বলেন, অরাজনৈতিক শব্দটি নিরপেক্ষ শব্দটির চেয়ে ভালোভাবে সেনাবাহিনীর ভূমিকা বর্ণনা করে।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আগে কোনো সংস্থা কিংবা বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠক সংক্রান্ত গুজব উড়িয়ে দেন তিনি। বলেন, এসব খবরের কোনো সত্যতা নেই। তিনি দাবি করেন, জেনারেল বাজওয়ার সঙ্গে এখনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে।

পাকিস্তানে সামরিক শাসনের কোনো সম্ভাবনা ছিল বলে প্রধান বিচারপতি মধ্যরাতে আদালত খুলেছিলেন, এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, দেশে আর কখনো সামরিক আইন হবে না। পাকিস্তান একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবেই ভবিষ্যতে এগিয়ে যাবে।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর বিতর্কিত ভূমিকা রয়েছে- এমন গুজবের ব্যাপারে জেনারেল বাবর ইফতেখার বলেন, এ ব্যাপারে কারো কাছে কোনো প্রমাণ থাকলে তা পেশ করতে হবে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এমন বিতর্কিত ভূমিকা নেওয়ার কোনো অবকাশ নেই।

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জেনারেল বাজওয়ার অনুপস্থিতির বিষয়ে আইএসপিআর ডিজি বলেন, সেদিন তার স্বাস্থ্য ভালো ছিল না। সেদিন তিনি অফিসেও আসেননি।শিংটন পাকিস্তানের কাছে কোনো ঘাঁটি চায়নি এবং কোনো স্তরে এটির উল্লেখ নেই। এক্ষেত্রে তিনি ইমরান খানের উদ্ধৃতি দিয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান পরিষ্কার করে জানান, ইসলামাবাদ যুক্তরাষ্ট্রকে তার ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান চালানোর অনুমতি দেবে না।

এ সময় ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন হামলার মুহূর্তে ইমরান খানের রাশিয়া সফর সম্পর্কে জেনারেল বাবর ইফতেখার বলেন, ইমরান খানের মস্কো সফরের সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনীর সম্মতি ছিল। তবে ইমরান খান যে সময় রাশিয়া সফর করছিলেন, সেসময়েই তারা অভিযান চালাবে এটা কারো চিন্তাতেই ছিল না এবং বিষয়টি স্পষ্টতই খুবই বিব্রতকর ছিল।