উড়বে স্যাটেলাইট-বিমান, আকাশে থাকবে মাসের পর মাস!

সোলার ইমপালস-২।এক অদ্ভুত বিমান। চেহারা ও গড়ন উদ্ভট, বিস্তৃত ডানার একটি ঘাসফড়িং। শুধু বিমান নয়, এটি একটি স্যাটেলাইট-বিমান। নবায়নযোগ্য শক্তির সম্ভাবনা প্রমাণ করতে এই বিমান তৈরি করা হয়। কারণ বিমানটি চলে সৌরশক্তিতে, সোলার প্যানেল থেকেই সংগ্রহ করে জ্বালানি। আকাশে দীর্ঘ সময় ধরে, এমনকি মাসের পর মাস উড়ে উড়ে ছদ্ম-স্যাটেলাইটের কাজ করবে এটি। সিএনএন।

সোলার ইমপালস-২

খবরে বলা হচ্ছে, সুইস এক্সপ্লোরার বার্ট্রান্ড পিকার্ড এবং সুইস প্রকৌশলী বার্ট্রান্ড বোর্শবার্গের মার্কিন-স্প্যানিশ স্টার্টআপ কোম্পানি স্কাইডুয়েলার এয়ারোর এ বিমান ৩০, ৬০, ৯০ দিন এমনকি হয়তো এক বছর সময় ধরে আকাশে উড়বে ক্লান্তিহীনভাবে।

২০১৬ সালে ১৭ হাজারেরও বেশি সৌর প্যানেল দিয়ে আচ্ছাদিত একটি উদ্ভট চেহারার প্লেন আকাশে উড্ডয়ন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়েছিল। ৭৪৭ এর ডানার বিস্তার নিয়ে বোয়িংটি এসইউভির সমান ওজনের হলেও এক ফোঁটা জ্বালানি ব্যবহার না করেই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল।

২০১৯ সালে এটি কিনেছিল স্কাইডুয়েলার। তাদের লক্ষ্য ছিল এটিকে বিশ্বে বাণিজ্যিকভাবে ‘ছদ্ম-স্যাটেলাইট’ হিসেবে বাজারজাত করা। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবার্ট মিলার বলেন, বিমানটি হবে অনির্দিষ্টকালের জন্য একটি স্যাটেলাইট। কারণ এটি মূলত এমন কিছু করতে পারে, যা দূর আকাশের একটি স্যাটেলাইট করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে টেলিযোগাযোগ এবং আর্থ ইমেজিং প্রদানের পাশাপাশি দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া এবং প্রাকৃতিক সম্পদ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা।

এই জাতীয় অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জন্য একটি বিমান ব্যবহার করা আরও সহজ এবং সস্তা। কারণ স্যাটেলাইটগুলো তৈরি করা ব্যয়বহুল এবং সাধারণত জীবাশ্ম জ্বালানি দ্বারা চালিত রকেটের মাধ্যমে কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করতে হয়। এটি আরও টেকসই, কারণ স্যাটেলাইটগুলোর আয়ুষ্কাল সীমিত থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ডিকমিশন হয়ে স্পেসজাঙ্কে পরিণত হয়।

সোলার ইম্পালস-২ কেনার পর স্কাইডুয়েলার এটিকে সংশোধন করে আরও আধুনিক করতে কয়েক মাস সময় নিয়েছিল। ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রথমবার এটিকে আবার উড়িয়েছে তারা। তারপর থেকে এটি দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায় ১২টি পরীক্ষামূলক ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে।

মিলার বলেন, আমরা এটিকে একটি ড্রোনে পরিণত করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। পাইলট এখনো নিরাপত্তার জন্য সেখানে আছে, কিন্তু আমাদের এখন সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিতভাবে বিমান চালানোর ক্ষমতা আছে।

এর টেক-অফ এবং ল্যান্ডিং এখনো পাইলট দ্বারা পরিচালিত হয়। মিলার বলেছেন, পরবর্তী পদক্ষেপটিতে এমন সিস্টেম যুক্ত করা হচ্ছে- যা এটিকে পরিপূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় করে তুলবে। এর পরে আমরা বিমান থেকে পাইলটকে সরিয়ে দিতে পারি। এখন দ্বিতীয় বিমানের নির্মাণ শুরু করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি- যার কোনো ককপিট থাকবে না। নতুন বিমানটি ২০২৩ সালের প্রথম দিকে আকাশে উড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।