ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানিতে ধস

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে দেশটিতে খাদ্যশস্য উৎপাদনে ব্যাপক সংকট দেখা দেয়। তবে যুদ্ধের মধ্যেও গত এপ্রিল মাসে ১০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করেছে ইউক্রেন। যুদ্ধ শুরুর আগে রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রতিমাসে ৪০-৫০ লাখ টন। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ইউক্রেনের খাদ্যশস্য

খবরে বলা হচ্ছে, চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ৭ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে বসন্ত ফসল বপন করেছে ইউক্রেন। ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ কম। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে ১.০৯০ মিলিয়ন টন বা ১০ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য রপ্তানি করেছে। দেশটির কৃষিমন্ত্রী মাইকোলা সোলস্কি এ তথ্য জানিয়েছেন।

মন্ত্রী জানান, আমরা রোমানিয়ায় ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। রাশিয়া বন্দর অবরোধ করে রেখেছে। যে  কারণে রপ্তানির পরিমাণ কমে গেছে। রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়াতে নতুন গম রপ্তানি করা হয়েছে। তবে পরবর্তী দুই মাসে দেশ দুটিতে রপ্তানি প্রক্রিয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

সোলস্কি বলছেন, যুদ্ধের আগে ইউক্রেনের শস্যের চালান প্রতি মাসে ছিল ৪ থেকে ৫ মিলিয়ন টন। এখন তা নেমে এসেছে কয়েক লাখে। যুদ্ধ চলতে থাকলে শস্য রপ্তানি প্রতিদিনই আরও কঠিন হবে।

ফরবেসের খবরে বলা হচ্ছে, ২০২১ সালে ইউক্রেন ছিল বিশ্বের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক দেশ। ওই বছর ২০ মিলিয়ন টন গম এবং মেসলিন (গম এবং রাইয়ের মিশ্রণ) রপ্তানি করা হয়েছিল। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য মতে, বার্লি এবং সূর্যমুখী বীজ রপ্তানিতে বিশ্বে শীর্ষে অবস্থান করছে দেশটি।

জাতিসংঘ ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণের কারণে ২০২২-২৩ মৌসুমে ইউক্রেনের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ফসল কাটা সম্ভব হবে না। এমন অবস্থায় বিশ্বে খাদ্যের দাম ৮ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশ্ব খাদ্য পরিস্থিতি ইতোমধ্যে অনেকটা খারাপ পর্যায়ে রয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে অবকাঠামো ও বন্দরগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত মার্চ মাসে ইতালির পার্লামেন্টে বলেছিলেন, যুদ্ধ যদি ইউক্রেনের কৃষকদের কাজ কেড়ে নেয়, তাহলে সারাবিশ্বে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। মার্চের শুরুতে রাই এবং ওটসহ কিছু কৃষি পণ্যের রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন।